বারডেম হাসপাতালের ভিতরের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

শাহবাগ থানায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের আগে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ইটিটি রুমে গত ৯ সেপ্টেম্বর আসলে কী ঘটেছিল—সে ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার সময় ইটিটি রুমে প্রবেশের দরজাসংলগ্ন কাচের দেওয়ালের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন এডিসি হারুন অর রশিদ। পরনে নীল রঙের চেক প্রিন্টের ফুলহাতা শার্ট। তার দুই হাতে দুইটি মোবাইল ফোন। এ সময় ভিডিও করার জন্য চিৎকার করে কাউকে নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন। বলেন, ‘ভিডিও কর। ভিডিও কর। মেয়েসহ ভিডিও কর।’

এর মধ্যে আকাশি নীল রঙের শার্ট ও মাথায় ক্যাপ পরিহিত এক যুবক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় যিনি ভিডিও করছেন, তিনি চিৎকার করে বলছেন, ‘এ্যাই সামনে ক্যান। সামনে ক্যান। আরে সামনে ক্যান। অই।’

তখন এডিসি সানজিদা আফরিন নিপা ইটিটি করার জন্য পোশাক পরিহিত ছিলেন। তিনি বলছেন, ‘আমি এই পোশাকে আছি। ননসেন্স।’

আকাশি নীল রঙের শার্ট পরিহিত যুবক বারবার বলছিলেন, ‘স্যার প্লিজ স্যার। প্লিজ স্যার।’ একপর্যায়ে সানজিদা আফরিন ইটিটি করার জন্য টানানো পর্দা নিজের দিকে টেনে নিয়ে আড়াল করেন।

এদিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির মেয়াদ পাঁচ কর্মদিবস বাড়ানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলেও বহালে আছেন আলোচিত অপর পুলিশ কর্মকর্তা সানজিদা আফরিন নিপা।

এমনকি বিভাগীয় তদন্ত চলাকালে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা নিজেদের মতো করে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হচ্ছেন। যদিও এ নিয়ে খোদ ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, সানজিদা এ ধরনের কোনো স্টেটমেন্ট দিয়ে ঠিক করেননি। কারণ, কমিশনারের অনুমতি ছাড়া তিনি এভাবে স্টেটমেন্ট দিতে পারেন না।

তদন্ত কমিটির সময় বাড়ার বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বলেন, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনার তদন্ত কমিটিকে আরও পাঁচ দিন সময় দিয়েছেন। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়েছে ডিএমপি সদর দপ্তরের উপ-কমিশনার (অপারেশন্স) আবু ইউসুফকে।

কমিটির সদস্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিউমার্কেট জোনের এডিসি শাহেন শাহ জানান, আমরা চেষ্টা করেছি দুই দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করতে। তবে সেটা সম্ভব হয়নি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ, সাক্ষ্য গ্রহণ, জিজ্ঞাসাবাদসহ অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আশা করি, বর্ধিত সময়ের মধ্যে তদন্তকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে এডিসি হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী দুই জন হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম। পরে এ ঘটনায় এডিসি হারুনকে প্রত্যাহার করে প্রথমে ডিএমপির পিওএম বিভাগে, পরে এপিবিএনে বদলি করা হয়। এরপর সাময়িক বরখাস্ত করে প্রথমে পুলিশ সদরদপ্তরে এবং পরে রংপুর রেঞ্জে ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *