গাজার আল আহলি হাসপাতালে ইসরাইলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৫০০ মানুষের মৃত্যুর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন আরব নেতৃবৃন্দ। ইসরায়েল সফর শেষে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে যাওয়ার কথা ছিল প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। সেখানে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের।
জর্ডান
হাসপাতালে ইসরাইলি বোমা হামলাকে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছেন জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। তার দেশে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সামিট বাতিল করে দিয়ে বলেছেন, এই অপরাধের পরও কোনো মানুষ নীরব থাকতে পারেন না।
সৌদি আরব
আন্তর্জাতিক মহল থেকে অসংখ্য মানুষ আপিল করা সত্ত্বেও বেসামরিক লোকজনের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে হামলা চালানোর কারণে ইসরাইলের তীব্র নিন্দা করেছে সৌদি আরব। হাসপাতালে হামলাকে নৃশংস উল্লেখ করে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এ হামলার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন, নীতি এমনকি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক আইনও লঙ্ঘন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি ও আইন ভঙ্গের জন্য অব্যাহতভাবে পুরোপুরি দায়ী ইসরাইলি বাহিনী। এই বিপজ্জনক ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ থেকে বিরত রাখবে বলে বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়।
মিশর
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজায় হাসপাতালের ওপর ইসরাইলের বোমা হামলার সর্বোচ্চ নিন্দা প্রকাশ করি। এটা সুস্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
কুয়েত
কড়া নিন্দা জানিয়ে কুয়েত বলেছে, গাজায় আল আহলি হাসপাতালে বর্বর বোমা হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। এতে কয়েক শত নিরীহ মানুষ মারা গেছেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলা হয়, দখলদার বাহিনী আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক আইন লঙ্ঘন করে হাসপাতাল ও সরকারি স্থাপনাকে টার্গেট করছে।
কাতার
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে হামলার কড়া নিন্দা করে বলেছে, গাজা উপত্যকায় হামলা বিস্তৃত করেছে ইসরাইল। এর মধ্যে আছে হাসপাতাল, স্কুল ও অন্যান্য সেন্টার, যেখানে লোকজন অবস্থান করেন। এটা তাদের বিপজ্জনক এক বাড়াবাড়ি।
মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ
মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ (এমডব্লিউএল) বর্বর হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থার প্রধান শেখ আব্দুল করিম আল ইসা বিবৃতিতে হামলাকে বর্বর অপরাধ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই ভয়াবহ গণহত্যা থেকে বেসামরিক লোকজনকে রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দেন তিনি।
ফিলিস্তিনের তিন দিনের শোক
গাজার আল আহলি হাসপাতালে বিমান হামলায় নিহতদের উদ্দেশ্যে তিন দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
বিক্ষোভ
গাজার হাসপাতালে বোমা হামলার পর বেশ কয়েকটি বড় শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরের বেশ কয়েকটি শহরে রাতেই ফিলিস্তিনিরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। বিভিন্ন জায়গায় তারা পাথর ছুঁড়তে থাকেন নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে। লেবাননের রাজধানী বেইরুতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের সামনে হাসপাতালে বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। এছাড়া ফরাসি দূতাবাসের বাইরে আরেকটি দল জড়ো হযন এবং ভবনটি লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়েন বলে জানা গেছে। ত্রিপোলি এবং লিবিয়ার অন্যান্য শহরেও শত শত মানুষ ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করে এবং গাজাবাসীদের সমর্থনে স্লোগান দেয়।