সাঈদ চৌধুরী
JUTE, THE GOLDEN FIBRE OF BENGAL AND A BRITISH EMPIRE MONOPOLY শিরোনামে ৩৬৪ পৃষ্ঠার গ্রন্থে তুলে আনা হয়েছে ১৮৩০ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত বাঙালি কৃষকদের ঘাম কীভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বাণিজ্য সম্প্রসারণকে সহজতর করেছিল, তার গবেষণামূলক তত্ত্ব ও তথ্য।
পাটকে বাংলাদেশের সোনালী আঁশ বলা হয়। এটি দেশের প্রধান অর্থকরী ফসল এবং তা রপ্তানি করে দেশে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়, যে কারণে পাটকে সোনালী আঁশ বলা হয়। পাটগাছ তৃণজাতীয় উদ্ভিদ, যা ৫ থেকে ১০ হাত পর্যন্ত লম্বা হয় । সাধারণত তিন ধরনের পাট আমাদের দেশে জন্মায়। দেশি পাটের আঁশ সাদা, তোষা পাটের আঁশ লালচে এবং মেসতা পাটের আঁশ অপেক্ষাকৃত মোটা হয়ে থাকে।
একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমাদৃত বাংলাদেশের পাট নিয়ে লন্ডনের স্টেপনি কমিউনিটি ট্রাস্ট (এসসিটি) একটি সফল প্রকাশনা সম্পাদন করেছে।
এটি ঐতিহ্য সম্পর্কিত শিক্ষা ও প্রচারের ক্ষেত্রে (heritage learning and promotion) নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং পদ্ধতি সমৃদ্ধ একটি অনন্য কমিউনিটি প্রকল্প। এতে ঐতিহ্যের জ্ঞানকে সমাজের সামনে আনার চেষ্টা করা হয়েছে।
বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্টেপনি কমিউনিটি ট্রাস্টের সেক্রেটারি এবং অপারেশন ম্যানেজার বদরুল আলম, প্রকল্প সমন্বয়ক মুহাম্মদ আহমদুল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক হিলারি স্লেইমান, স্বেচ্ছাসেবক মানহা হুসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সোনালী আঁশ সম্পর্কিত চিত্রনাট্য উপস্থিত সকলের মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে, যেখানে প্রবাসী কমিউনিটি ছাড়াও মূলধারার গবেষক, লেখক ও পাঠক সমবেত হয়েছিলেন। নাট্যগল্প লেখেছেন মুহাম্মদ আহমদুল্লাহ। অভিনয় করেছেন চিত্রনাট্য লেখক ড. কানান সালিহ, অভিনেতা সৈয়দা তাসমিয়া তাহিয়া, আহমদ চৌধুরী, তাসনিয়া তাহসিন ও অ্যান্থনি স্মিথ।
পাট ও পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনী ছিল অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ। এতে ছিল পাটের কাপড়, ব্যাগ, বস্তা, ওয়ালমেট, কার্পেট, গৃহসজ্জার সামগ্রী ইত্যাদি বাহারি জিনিসপত্র।
স্টেপনি কমিউনিটি ট্রাস্টের (এসসিটি)এই প্রকল্প বাংলাদেশের সোনালী আঁশ তথা পাট থেকে তৈরী জিনিস পত্রকে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে। পাট থেকে রশি, সুতা, বস্তা, কাপড়, কার্পেট ইত্যাদি কিভাবে তৈরি করা হয় তার বিবরণ চমৎকার ভাবে দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গ্রন্থ রচনায় লন্ডন এবং ডান্ডির প্রায় দুই ডজন স্বেচ্ছাসেবক দুই বছরের অধিক সময় কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তারা শ্রমজীবী মানুষের প্রতি ভালোবাসার এক নজির স্থাপন করেছেন এবং প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে নতুন ভাবে উপস্থাপন করেছেন। এটি বর্তমান সময়ে কম পরিচিত হলেও খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ।
স্টেপনি কমিউনিটি ট্রাস্টের সেক্রেটারি বদরুল আলম ও প্রকল্প সমন্বয়ক মুহাম্মদ আহমদুল্লাহ এবং তাদের নিবেদিতপ্রাণ স্বেচ্ছাসেবকগণ পাট তথা জুটের ইহিতাস সম্পর্কে মূল ধারণাটি প্রবর্তন এবং বিকাশ করেছেন এবং ন্যাশনাল লটারি হেরিটেজ ফান্ডকে এই প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য রাজি করিয়েছেন। যথাসময়ে গ্রন্থা প্রকাশনা, পাট ও পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনী এবং সোনালী আঁশ সম্পর্কিত চিত্রনাট্য উপস্থান করে স্টেপনি কমিউনিটি ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন।