‘বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণে রাখঢাক রাখছে না ভারত’

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

দৈনিক সমকাল বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘিরে অনুষ্ঠিত একটি আলোচনা সভার খবরের শিরোনাম করেছে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণে রাখঢাক রাখছে না ভারত। শুক্রবার আয়োজিত হওয়া এই অনলাইন সেমিনারে ছিলেন শিক্ষক, সাবেক কূটনীতিকসহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।

ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হওয়া এই ওয়েবিনারে আলোচনার বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশ ও তার প্রতিবেশী:বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব’

ওয়েবিনারে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রিয়াজ মন্তব্য করেন যে ‘ভারত বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।’

ভারতের ‘বৈশ্বিক শক্তি হওয়ার রাজনৈতিক অভিলাষ ও ভূকৌশলগত নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক স্বার্থ ও বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব সীমিত রাখা’ এর পেছনের কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন।

এসব কারণে সাতই জানুয়ারি নির্বাচনে বর্তমান সরকারকে ভারত সমর্থন দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মি. রিয়াজ। তার মতে, ‘শেখ হাসিনার সরকার পতন হলে বাংলাদেশ রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে – এমন আশঙ্কা থেকে সাতই জানুয়ারি নির্বাচনে এই সরকারকেে সমর্থন দিয়েছে ভারত’।

ওয়েবিনারে ডালাস বিশববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কলামিস্ট শাফাকাত রাব্বীর মন্তব্য খবরে উঠে এসেছে এভাবে: “সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করে নেয়ার ক্ষেত্রে ভারতের চারিত্রিক অবস্থার সাথে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও জনগণের এক রকম ‘মেনে নেয়ার’ চরিত্র গড়ে উঠেছে।”

খবরে উঠে এসেছে মি. রাব্বী মন্তব্য করেছেন, “বাংলাদেশের সাথে কোনো চুক্তি করলে ভারত লাভের প্রায় পুরোটাই খেয়ে ফেলতে চায়।”

এই বিষয়ে দৈনিক মানবজমিনের খবরের শিরোনাম ভারত বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায় কেন? অধ্যাপক আলী রিয়াজের বরাত দিয়ে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০০১ সালের পর থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর ওপর ভারতের ‘নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ’ করার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মি. রিয়াজের বরাত দিয়ে এই খবরে বলা হচ্ছে, “বাংলাদেশে গত এক দশক ধরে সামগ্রিকভাবে গণতন্ত্রের যে পশ্চাদপসারণ হয়েছে, সে সময় ভারত কখনোই কোনো কথা বলেনি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ নিয়ে সময়ে সময়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। যুক্তরাষ্টের সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এতে ভারতের বাণিজ্যিক স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।”

এই ওয়েবিনার নিয়ে প্রথম আলোর খবরের শিরোনাম প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করছে ভারত। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে ওয়েবিনারে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেন বলেছেন ‘ভারতের দিক থেকে এটা দোষের কিছু না।’

মি. হোসেনকে উদ্ধৃত করে এই খবরে বলা হচ্ছে, “বাংলাদেশের অনেক উঁচু পর্যায়ের মানুষ আছেন যারা ভারত ও চীনের স্বার্থ দেখেন। কারণ, এতে তাদেরও স্বার্থ আছে। ফলে বাংলাদেশে যে দলই আসুক, তাদের সাথে সম্পর্ক রেখে সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করে নেয় ভারত। ভারতের দিক থেকে এটা দোষের কিছু নয়।”

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নয়া দিগন্তের খবর নেতাকর্মীদের মুক্তিতে বিএনপির স্বস্তি। সাতই জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিএনপির যেসব নেতাকর্মী আটক হয়েছিলেন, তাদের অধিকাংশই মুক্তি পেয়েছেন বলে বলা হচ্ছে খবরে।

বিএনপির তথ্যের বরাত দিয়ে খবরে প্রকাশ করা হয়েছে যে ২৮শে অক্টোবর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক হাজার ৬৪৫টির বেশি মামলা করা হয়েছে, যেগুলোতে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৫ হাজার ৭৭১ জনকে। এমন পরিস্থিতিতে রমজান মাসে ‘সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে’ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

সমকালের শিরোনাম নেতাকর্মীর ঐক্যেই ভরসা বিএনপির। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে তৈরি করা এই খবরে বলা হচ্ছে যে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি দাবি আদায়ে ব্যর্থ হলেও মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ‘দৃঢ় মনোবল’ রয়েছে।

কয়েকজন নেতার বরাত দিয়ে এই খবরে বলা হচ্ছে যে মামলার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ নেতাকর্মীদের মামলা পরিচালনায় আইনজীবী নিয়োগ, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে দলের হাইকমান্ড। এর পাশাপাশি কর্মীদের সক্রিয় করতে নিয়মিত ভার্চুয়াল আলোচনা শুরু হয়েছে।

মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলের সংঘাতের খবর ছাপা হয়েছে অধিকাংশ পত্রিকাতেই। কালের কণ্ঠের শিরোনাম টেকনাফ সীমান্তের ওপারে আবারও গুলির শব্দ। এই খবরে বলা হচ্ছে টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ আর হোয়াইক্যং সীমান্ত এলাকায় প্রায় তিন দিন পর আবারও দিনের বেলায় থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে।

ইন্দোনেশিয়া ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়ার বরাত দিয়ে এই খবরে বলা হচ্ছে যে আরাকান আর্মির হামলার মুখে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছে। সেনাবাহিনী দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণের জন্য রোহিঙ্গা যুবকদের বাছাই করছে এবং তাদের নাগরিকত্ব, পরিচয় পত্র আর আর্থিক সুবিধার লোভ দেখানো হচ্ছ বলেও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরকে ঘিরে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন US team due today in first visit after polls. তিন সদস্যের এই দলে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা পরিষদের সিনিয়র পরিচালক এইলিন লওব্যাকার, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি প্রতিমন্ত্রী আফরিন আখতার আর দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি’এর এশিয়া বিভাগের প্রশাসক মাইকেল শিফার রয়েছেন।

এই প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করবেন বলে বলা হচ্ছে খবরে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে দৈনিক ইত্তেফাকের খবরের শিরোনাম নির্বাচনের আগে দুর্ভিক্ষ ঘটানোর ষড়যন্ত্র ছিল। শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, নিত্যপণ্য মজুদ করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর সাথে সরকার উৎখাতের আন্দোলনকারীরা জড়িত থাকতে পারে।

শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে এই খবরে বলা হয়েছে: “নির্বাচনের আগে দুর্ভিক্ষ ঘটানোর ষড়যন্ত্র ছিল, সেটা এখনো আছে। অবৈধ মজুতদারদের গণধোলাই দেয়া উচিৎ।”

স্বাস্থ্যখাতের পরিস্থিতি নিয়ে নিউ এজের রিপোর্টের শিরোনাম Illegal hospitals pose threat to public health. খবরে বলা হচ্ছে ‘ব্যাঙের ছাতার মত তৈরি হওয়া’ অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়গনস্টিক সেন্টার জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত এক সপ্তাহের মধ্যে অন্তত দুইজন রোগী ভুল চিকিৎসার অভিযোগে ঢাকার দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর এই বিষয়টি নিয়ে আবারো আলোচনা তৈরি হয়েছে।

খবরে বলা হচ্ছে যে বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলো পুরো দেশের চাহিদার মোট ৬০ শতাংশ পূরণ করতে পারে। এই ঘাটতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে মানহীন হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলো রোগীদের কাছ থেকে মুনাফা করছে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

খবরে বলা হচ্ছে রোগী আকৃষ্ট করতে এই প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি হাসপাতালের আশেপাশে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। সরকারি কর্তৃপক্ষগুলোর নজরদারির অভাবের কারণে অবৈধভাবে ব্যবসা চালালেও পার পেয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা, খালাস ৯৫ ভাগ আসামী – যুগান্তরের প্রথম পাতার খবরের শিরোনাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের তথ্যের বরাত দিয়ে এই খবরে বলা হচ্ছে যে গক ৫ বছরে মানব পাচার প্রতিরোধে ৩ হাজার ৩২০টি মামলা হয়েছে যার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৫২৮টি মামলার। আর এই ৫২৮ মামলার ৪৯৭টি মামলাতেই আসামীরা খালাস পেয়েছেন।

এসব মামলায় আসামী খালাস হওয়ার পেছনে বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা, তদন্তে গাফিলতি, মিথ্যা সাক্ষ্য, আদালতে স্পর্শকাতর প্রমাণাদি উপস্থাপনে অনীহার মত বিষয়গুলো প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। – বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *