বদলি হজ করার নিয়ম

ধর্ম ও দর্শন সময় চিন্তা সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

অন্যের পক্ষে হজ করাকে বদলি হজ বলে। কেউ কোন কারণে হজ করার সামর্থ্য থাকার পরও হজ করতে না পারলে তার জন্য বদলি হজ করার ওছিয়ত করা ওয়াজিব।

যে মহিলার ওপর হজ ফরজ হয়েছে, সে যদি সারাজীবন মাহরাম আত্মীয় (নিজের স্বামী বা ছেলে বা যার সঙ্গে বিয়ে অবৈধ তাদের মাহরাম বলে) না পাওয়ার কারণে হজ করতে না পারে তবে সে গুনাহগার হবে না। অবশ্য শেষ জীবনে বদলি হজ করার ওছিয়ত করা ওয়াজিব হবে। এরূপ ওছিয়ত করে গেলে সে গুনাহ থেকে রেহাই পাবে। মৃত্যুর পর তার ওলি-ওয়ারিশরা তার টাকা দিয়ে একজন লোককে মক্কা শরিফে হজ করতে পাঠাবে। সে মৃতার পক্ষ থেকে হজ করবে, এর দ্বারা মৃতার জিম্মা থেকে হজের ফরজ আদায় হয়ে যাবে। হজ ফরজ হওয়ার পর অলসতা করে দেরি করলে এবং পরে অন্ধ বা শক্তিহীন হয়ে গেলে তার জন্য বদলি হজ করানোর ওছিয়ত করা ওয়াজিব।

যে নিজে হজ করতে পারেনি, সে বদলি হজ করার জন্য ওছিয়ত করে মারা গেলে দেখতে হবে যে তার ষোলআনা ত্যাজ্য সম্পত্তি থেকে প্রথমে তার দাফন-কাফন ও ঋণ পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে তার এক-তৃতীয়াংশ দ্বারা হজের সম্পূর্ণ খরচ নির্বাহ হয় কিনা? যদি এক-তৃতীয়াংশ দ্বারা হজের সম্পূর্ণ খরচ নির্বাহ হয় তবে ওয়ারিশদের ওপর তার পক্ষ থেকে এবং তার বাড়ি থেকে সম্পূর্ণ খরচ দিয়ে বদলি হজ করানো ওয়াজিব।

কিন্তু যদি সম্পত্তি কম হয় এবং এক-তৃতীয়াংশ দ্বারা একজন লোককে হজে পাঠানো সম্ভব না হয় তবে বদলি হজ করাবে না।

আরও পড়ুন
হজ পালনের নিয়ম

অবশ্য যদি এরূপ করে যে, মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য এক-তৃতীয়াংশে যা হয় তা মৃত ব্যক্তির মাল থেকে দেবে আর অতিরিক্ত টাকা অলি নিজে দেবে তবে বদলি হজ করাতে পারবে।

মোট কথা, মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পত্তি থেকে এক-তৃতীয়াংশের বেশি দেয়া যাবে না। অবশ্য সব ওয়ারিশ যদি একত্রিত হয়ে সন্তুষ্টচিত্তে বলে যে, আমরা আমাদের অংশ নেব না, তোমরা বদলি হজ করিয়ে দাও তবে এক-তৃতীয়াংশের বেশি খরচ করাও জায়েজ।

কেউ যদি বদলি হজের ওছিয়ত করে মারা যায়; কিন্তু ত্যাজ্য সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের বেশি খরচ করতে ওয়ারিশরা সন্তুষ্টচিত্তে অনুমতি না দেয়ায় যদি বদলি হজ করা না হয় তবে ওছিয়তকারীর গুনাহ হবে না। ওছিয়ত ব্যতীত মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে বদলি হজ করানো জায়েজ নয়।

অবশ্য যদি সব ওয়ারিশ খুশি হয়ে অনুমতি দেয় তবে জায়েজ। ইনশাআল্লাহ ফরজ হজ আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু শরিয়তে নাবালেগের অনুমতির যেহেতু কোন মূল্য নেই তাই নাবালেগের অংশ থেকে হজের খরচ কখনোই নেয়া যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *