ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব নিয়ে আইসিজে শুনানি অব্যাহত

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের আইনি পরিণতি নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) শুনানি অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, আলজেরিয়া, সৌদি আরব, নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশ এবং বেলজিয়াম প্রাথমিক যুক্তি উপস্থাপন করছে। শুনানিতে অংশ নিয়ে এসব দেশ অবিলম্বে এই দখলদারিত্ব অবসানের দাবি জানিয়েছে।

৫০টিরও বেশি রাষ্ট্র এবং অন্তত তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে বিচারকদের সামনে শুনানিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ওই আদালতে সোমবার থেকে শুনানি শুরু হয়েছে।

ইসরায়েলের দখলদারত্ব, অবৈধ বসতি স্থাপন ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের সঙ্গে একীভূত করার অপতৎপরতা পর্যালোচনা করতে ২০২২ সালে আইসিজের প্রতি ওই আহ্বান জানিয়েছিল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের দখলে থাকা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিয়ে আইসিজের নির্দেশনা ও মতামত চেয়েছে সাধারণ পরিষদ।

আইসিজের শুনানির প্রথম দিনে ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। শুনানিতে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দশকের পর দশক ধরে ইসরায়েল বৈষম্য ও জাতিবিদ্বেষী অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এতে ফিলিস্তিনিরা পরাধীনতা, উদ্বাস্তু জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

রিয়াদ আল-মালিকি বলেন, ‘অবৈধ দখলদারত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক আইনে একটাই সমাধানের কথা বলা রয়েছে। সেই সমাধান হলো অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে দখলদারত্বের সম্পূর্ণ অবসান।’

শুনানিতে ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী পল রেকলার আদালতকে বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো ও সম্ভাব্য সর্বশেষ সমাধান দুই রাষ্ট্র গঠন, যা ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি উভয়ের জন্যই জরুরি। তবে এই সমাধানের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হলো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারত্ব।’

পল রেকলার আদালতে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘ইসরায়েলের এই দখলদারত্বের মূল লক্ষ্য হলো ফিলিস্তিনের বেশির ভাগ ভূখণ্ড স্থায়ীভাবে দখল করে নেওয়া এবং এসব ভূখণ্ডে খুব কমসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে বসবাস করতে দেওয়া।’

এর আগে ২০০৪ সালের জুলাইয়ে সাধারণ পরিষদের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি দখলদারত্ব বিষয়ে শুনানি নেয় আইসিজে। তখন জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালত বলেছিলেন, দখল করা পশ্চিম তীরে ইসরায়েল যে দেয়াল নির্মাণ করেছে, তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। একই সঙ্গে আদালত সেই দেয়াল ভেঙে ফেলতে বলেছিলেন। কিন্তু দুই দশক পেরিয়ে গেলেও সেই দেয়াল ভাঙেনি ইসরায়েল।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় ২৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার মধ্যেই আইসিজেতে এই শুনানি শুরু হলো।
ইসরায়েল এই সপ্তাহের শুনানিতে অংশ নিচ্ছে না এবং ২০২২ সালের জাতিসংঘের অনুরোধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এটিকে “ঘৃণ্য” এবং “অসম্মানজনক” বলে অভিহিত করেছেন। সুত্র: আল জাজিরা, আল মানার ও রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *