যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রবিবার (২১ জুলাই ২০২৪) জাতির উদ্দেশ্যে লেখা এক চিঠিতে জানিয়েছেন, তিনি ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা এই চিঠিতে বাইডেন বলেন, ” যদিও পুনরায় নির্বাচিত হওয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল, আমি বিশ্বাস করি আমার দল এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আমার সরে দাঁড়ানো উচিত, এবং আমার মেয়াদের বাকি সময় পুরোপুরি প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত।”
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের জন্য প্রতিযোগিতা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হবার প্রচেষ্টার সমাপ্তি ঘটিয়েছেন। বাইডেনের সিদ্ধান্ত আসে নির্বাচনের মাত্র চার মাস আগে ডনাল্ড ট্রাম্পের সাথে তাঁর বিপর্যস্ত টেলিভিশন বিতর্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করার পর।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বাইডেনের উপর ডেমোক্র্যাট দলের মিত্রদের ক্রমাগত চাপ ২৭ জুনের বিতর্ক অনুষ্ঠানের পর থেকে বৃদ্ধি পাবার পর এই সিদ্ধান্ত আসে। বিতর্ক অনুষ্ঠানে ৮১-বছর বয়স্ক প্রেসিডেন্ট তাঁর চিন্তা ধারার খেই হারিয়ে ফেলছিলেন, প্রায়ই প্রশ্নের উদ্ভট উত্তর দিচ্ছিলেন এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নানা মিথ্যাচারের জবাব দিতে ব্যর্থ হন।
বাইডেন তাঁর মেয়াদের বাকি সময় দায়িত্ব পালন করার পরিকল্পনা করছেন। তাঁর মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি, ওয়াশিংটন ডিসি সময় বেলা ১২টায়।
এদিকে বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের প্রতি তাঁর সমর্থন ঘোষণা করেন। অগাস্ট মাসে শিকাগোতে ডেমোক্র্যাট দলের ন্যাশনাল কনভেনশনে আনুষ্ঠানিক মনোনয়নের জন্য হ্যারিস এখন তাৎক্ষনিক ফেভারিট।
“আজ আমি কমলাকে আমাদের দলের প্রার্থী হিসেবে আমার পূর্ণ সমর্থন এবং অনুমোদন দিতে চাই,” বাইডেন সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন। “ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা – এখন সময় হয়েছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ট্রাম্পকে হারানোর।”
বাইডেন গত সপ্তাহে কোভিডে আক্রান্ত হবার পর ডেলাওয়ার সৈকতে তাঁর বাসায় অবস্থান নেয়ার সময় এই সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁর পরিবার এবং বিশ্বস্ত সহকর্মীদের ছোট গ্রুপের সাথে আলোচনা করেছেন। বাইডেন বলেছেন তিনি এই সপ্তাহের পরের দিকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন, যেখানে তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে বিস্তারিত বলবেন। বাইডেনের চিঠির সত্যতা হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করেছে।
দু’দলই আসন্ন নির্বাচনকে কয়েক দশকের মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং পরিণতিশীল নির্বাচন হিসেবে গণ্য করছে, এবং এই ঘোষণা তাদের উভয়ের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা হিসেবে এসেছে। বিশেষ করে যখন এই সিদ্ধান্ত পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী সমাবেশ ট্রাম্পকে হত্যা প্রচেষ্টার কয়েক দিন পরেই আসলো।
অতীতে কোন দলের অনানুষ্ঠানিক প্রার্থী নির্বাচনের এত কাছে এসে নিজেকে প্রত্যাহার করেন নি। সবচেয়ে কাছের উদাহরণ হবে প্রেসিডেন্ট লিনডন জনসন, যিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধের চাপে ১৯৬৮ সালের মার্চ মাসে ঘোষণা দেন তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হবার জন্য প্রার্থী হবেন না। – ভিওএ