কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা মর্মাহত। ওই বক্তব্য অবশ্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
সোমবার (১৫ জুলাই ২০২৪) দুপর থেকে সরকারপ্রধানের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে মিছিলকারীরা আবাসিক হলগুলো থেকে বেরিয়ে এসে ‘তুমি কে আমি কে – রাজাকার, রাজাকার’, ‘কে বলেছে কে বলেছে- সরকার সরকার’ ‘চাইতে গেলাম অধিকার- হয়ে গেলাম রাজাকার’ এবং ‘কোটা নয় মেধা- মেধা মেধা’- এ ধরনের শ্লোগান দিয়ে মিছিল করতে থাকে। ছাত্ররা অবশ্য বলছে ‘প্রধানমন্ত্রী সবাইকে রাজাকার বলায় তারা এমন শ্লোগান দিয়েছে’।
রোববার চীন সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতি-নাতনিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে? এটা আমার দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন। তাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার সব ফেলে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, দিনরাত খেয়ে না খেয়ে, কাদামাটি পেরিয়ে, ঝড়বৃষ্টি সব মোকাবিলা করে যুদ্ধ করে এ দেশে বিজয় এনে দিয়েছিলেন। বিজয় এনে দিয়েছিল বলেই তো আজ সবাই উচ্চপদে আসীন। আজ গলা বাড়িয়ে কথা বলতে পারছে। তা না হলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে থাকতে হতো।
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ চলছে। ছাত্র নেতারা বলেছেন, ‘রাজাকার রাজাকার’ ভয় দেখিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’।
দুই হাজার আঠার সালে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধাসহ সবরকম কোটা পদ্ধতি বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করেছিল সরকার। সম্প্রতি সেই পরিপত্র বাতিল করে উচ্চ আদালতের রায়ের পর থেকে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।