পাকিস্তানে তত্তাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার

এশিয়া সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

বর্তমান জাতীয় পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ আগামী মাসে অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারকে আর্থিক সঙ্কটে থাকা দেশের তত্তাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নাম প্রস্তাব করার কথা বিবেচনা করছে। গতকাল একটি মিডিয়া রিপোর্টে একথা জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন, ‘পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের মেয়াদ ১৪ আগস্ট শেষ হবে এবং নির্বাচন কমিশন পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে’।

পাকিস্তানি মিডিয়া জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শরীফের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ফেডারেল সরকার তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৮ আগস্ট জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়া হতে পারে। সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদের মেয়াদ পূর্ণ হলে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু অসময়ে বিধানসভা ভেঙে গেলে এক দিনের মধ্যে হলেও, সরকারকে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৯০ দিন সময় দেয়া হবে। সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত তত্তাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনা করবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিসভার একজন সিনিয়র সদস্য বলেছেন, ‘পাকিস্তানের অর্থনীতি এমন একটি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যেখানে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিন মাস সময় দেয়া যাবে না’। তিনি আরো বলেন, ‘আইএমএফ কর্মসূচি সঠিক পথে রাখতে নভেম্বরে দ্বিতীয় পর্যালোচনা নিশ্চিতের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তত্তাবধায়ক সরকারের আরো ক্ষমতা থাকা দরকার’।

পাকিস্তান মুসলিম লীগ এন (পিএমএল-এন) জানায়, সরকার নির্বাচন আইন-২০১৭ এর ধারা ২৩০ সংশোধন করার কথা ভাবছে। তত্তাবধায়ক সরকারকে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান এবং অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য আগামী সপ্তাহে জাতীয় পরিষদে সংশোধনীগুলো পেশ করা হতে পারে। তারা অর্থনৈতিক নীতির বাস্তবায়ন নিশ্চিতে একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসাবে তত্তাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর জন্য ইসহাক দারের (৭৩) নাম প্রস্তাব করার কথা বিবেচনা করছেন।

দারের নাম নজরে আসে যখন শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচন আইন ২০১৭-এ পরিবর্তনের কথা চিন্তা করে আসন্ন তত্তাবধায়ক সেট-আপকে তার সাংবিধানিক ম্যান্ডেটের বাইরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ক্ষমতায়ন করে।

ধারা ২৩০ অনুসারে, একজন তত্তাবধায়ক (অন্তর্বর্তীকালীন) সরকার শুধুমাত্র দৈনন্দিন বিষয়গুলোতে উপস্থিত থাকার জন্য তার কার্য সম্পাদন করবে যা সরকারের কার্যাবলী পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয়। আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার বা তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব কেউই নির্বাচন আইনের প্রস্তাবিত ধারা সংশোধনীর বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।

২০১৮ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন তত্তাবধায়ক সরকার আইএমএফের সাথে প্রোগ্রাম আলোচনায় প্রবেশ করতে চেয়েছিল, কিন্তু তৎকালীন আইনমন্ত্রী অন্তর্বর্তীকালীন সেট-আপের এমন ক্ষমতা নেই বলে এর বিরোধিতা করেছিলেন।

দারের প্রার্থিতা সম্পর্কে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সাথে আলোচনা করে নেয়া হবে। যদি দারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী করা হয় তবে তিনি অর্থমন্ত্রী হিসাবে পরবর্তী সরকারে ফিরে আসতে পারবেন না যদি বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থা এক প্রত্যাবর্তন করে।

তত্তাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য সাবেক অর্থমন্ত্রী হাফিজ শেখের নামও আলোচনায় এসেছে। সূত্রগুলো বলছে যে, সমস্ত ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য বর্তমান অর্থনৈতিক দলের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।

সূত্র: দ্য সিয়াসাত ডেইলি, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *