নেতানিয়াহুর বিদায়ঘণ্টা কি বাজতে যাচ্ছে

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

সিএনএন

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের নজিরবিহীন হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল। এই ব্যর্থতার জেরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিদায়ঘণ্টা বাজতে পারে। অন্তত ইসরায়েলি ইতিহাস এ কথাই বলছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে এমনটাই বলা হয়েছে।

বিশ্লেষণে বলা হয়, তিন দশকের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি রাজনীতিতে আছেন নেতানিয়াহু। এই সময়কালে তিনি কিছু ‘ডাকনাম’ অর্জন করেছেন। যেমন পরাজয়ের মুখ থেকে বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতার জন্য নেতানিয়াহু ‘দ্য ম্যাজিশিয়ান’ নাম পেয়েছেন। আবার ইসরায়েলি রাজনীতিতে অন্য কারও চেয়ে বেশি সময় ধরে সক্রিয় থাকার জন্য নেতানিয়াহু পেয়েছেন ‘কিং বিবি’ নাম।

নেতানিয়াহুর আরেকটি ডাকনাম আছে—‘মিস্টার সিকিউরিটি’। এই নাম তিনি উপভোগ করে আসছিলেন। তবে এখন তাঁর এই ডাকনাম প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কীভাবে তা হলো?

গত শনিবার সকালে ইসরায়েলে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালায় হামাস। ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ইসরায়েলে কয়েক হাজার রকেট ছোড়ে তারা। একই সঙ্গে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে তারা হামলা চালায়, অনেককে জিম্মিও করে।

হামাসের হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ৯ শ–এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাসের এক হাজারের বেশি যোদ্ধা কীভাবে ইসরায়েলে এত বড় হামলা চালাতে সক্ষম হলেন, তা এখনো অস্পষ্ট। হামাসের হামলার মাত্রায়, ভয়াবহতায় ইসরায়েল হতভম্ব।

ইসরায়েলের সাবেক প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ লিখেছেন, হলোকাস্টের পর এক দিনে এত বেশিসংখ্যক ইহুদি আর কখনো প্রাণ হারাননি।

আপাতত ইসরায়েলের বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানাচ্ছে না। ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ বলেছেন, কাকে দায়ী করা হবে, তা নিয়ে এখন তাঁরা আলোচনা করছেন না। কারণ, এখন এই আলোচনার সময় নয়।

সিএনএনের বিশ্লেষণে বলা হয়, তবে সেই সময় আসবে। ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-এর প্রধান রাজনৈতিক ভাষ্যকার অমিত সেগালের মতে, এ ঘটনার জেরে নেতানিয়াহুর প্রধানমন্ত্রিত্ব যদি টিকে যায়, তাহলে তিনি অবাকই হবেন। আর তেমনটা হলে তা একটি নজির স্থাপন করবে।

অমিত সেগাল সিএনএনকে বলেন, ‘ইসরায়েলের ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে যে প্রতিটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ও সংকট সরকারকে পতনের দিকে নিয়ে গেছে।’

ইতিহাসের নজির হিসেবে ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর গোল্ডা মেয়ার, ১৯৮২ সালে প্রথম লেবানন যুদ্ধের পর মেনাখেম বেগিন এবং ২০০৬ সালের দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধের পর এহুদ ওলমার্টের সরকারের পতনের কথা বলেন অমিত সেগাল।

উপাদানগুলো টেনে অমিত সেগাল বলেন, এখন নেতানিয়াহুর ক্ষেত্রে ঘড়ির কাঁটা টিক টিক করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *