নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবকে ‘অপর্যাপ্ত’ বলল হামাস, রাশিয়া বলেছে ‘দন্তহীন’

আন্তর্জাতিক সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ করে দিতে শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। তাতে গাজায় ‘নিরাপদে ও বাধাহীনভাবে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ করে দিতে’ চলমান সংঘাতে জড়িত সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

কয়েক দফা বিলম্বের পর নিরাপত্তা পরিষদে ১৩-০ ভোটে পাস হয় প্রস্তাবটি। পরিষদের মোট ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে ১৩টি প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিলেও ভোটদানে বিরত ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।

সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথম প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। প্রস্তাবের খসড়ায় গাজায় অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা পাঠানোর কথা বলা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার কারণে যুদ্ধবিরতি কথাটি পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে। এর বদলে শুধু মানবিক সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম স্থায়ী সদস্য রাশিয়া বলেছে, এই প্রস্তাব একটি ‘দন্তহীন’ ও ‘অক্ষম’ প্রস্তাব। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভাসিলি নিবানজিয়া বলেছেন, এই প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে বলা হয়নি। এর বদলে এটির মাধ্যমে ‘মুক্ত হস্তে’ ইসরায়েলকে তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। তিনি বলেছেন, গাজায় সহায়তার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ‘সমঝোতার প্রস্তাব’ পাস করেছে।

এনিয়ে এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, ত্রাণ বাড়াতে পাস করা এই প্রস্তাব অবরুদ্ধ গাজাবাসীর প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট নয়। এমন দুর্বল ও ফাঁপা প্রস্তাব পাস করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। গাজায় বিপদগ্রস্ত মানুষকে ইসরায়েলের হামলা থেকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে যায় এই প্রস্তাব।

যা রয়েছে পাসকৃত প্রস্তাবটিতে * সাধারণ ফিলিস্তিনিদের কাছে বাধাহীনভাবে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে। * একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির অবস্থা তৈরি করতে হবে। * ত্রাণ সরবরাহের জন্য যত পথ আছে তার সবগুলো ব্যবহার উপযোগী করে দিতে হবে। * জাতিসংঘের প্রধানের প্রতি একজন কর্মকর্তাকে নিযুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। যিনি ত্রাণ বিতরণের বিষয়টি দেখবেন।

এছাড়া জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া ও মানবিক সহায়তা পূরণে গাজায় পর্যাপ্ত জ্বালানি প্রবেশ করতে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় বিষয়ক কার্যালয় এক প্রতিবেদনে বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ২০ হাজার ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ নারী ও শিশু। এ সময়ে ৫৩ হাজার ৩২০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। সুত্র: আল জাজিরা ও রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *