অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে গণতন্ত্র, সুবিচার, মানবাধিকার এবং নির্ভয়ে মত প্রকাশের সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণের পর দেয়া বক্তব্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মচারীদের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ও তার কর্মীরা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে উপভোগ করবেন৷ দেশকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যাবেন৷’’
গতকাল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়। বঙ্গভবনে তাদের শপথ পড়ালেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘‘(পূর্ববর্তী সরকারের) ঘৃণ্য চেষ্টায় ব্যবহৃত হয়ে যারা অপরাধ সংগঠিত করেছেন তাদেরকে আইনানুগ বিচারের মাধ্যমে শিগগিরই শাস্তি দেয়া হবে৷ একই কথা সকল মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানা কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য৷ সর্বত্র অপরাধীর বিচার হবে৷’’
বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকারের উপরও জোর দিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধাণ৷ বলেন, নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী সরকার দূর হয়ে গেছে৷ কাল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্র, সুবিচার, মানবাধিকার এবং নির্ভয়ে মত প্রকাশের সুযোগ তৈরি হবে৷
তিনি বলেন, ‘‘এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার দেশের প্রত্যেকের সরকার৷ এখানে থাকবে সকলের আকাঙ্খা পূরণের অধিকার৷ অরাজকতার বিষবাষ্প এখন যেই ছড়াবে তাকে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ব্যর্থ করে দেয়া হবে৷ …যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকি, মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি আমাদের বিজয় অবশ্যই হবে৷’’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বঙ্গভবনের দরবার হলে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সামরিক–বেসামরিক কর্মকর্তা ও কূটনীতিকেরা দরবার হলে উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে ১৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টারা হচ্ছেন- সালেহউদ্দিন আহমেদ, ড. আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, এ এফ হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শারমিন মুরশিদ, বিধান রঞ্জন রায়, ফারুক–ই–আজম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সুপ্রদীপ চাকমা, আ. ফ. ম খালিদ হাসান, ফরিদা আখতার, নূর জাহান বেগম, মো. নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
১৬ উপদেষ্টার ১৩ জন আজ শপথ নিয়েছেন। ঢাকার বাইরে থাকায় বিধান রঞ্জন রায়, ফারুক–ই–আজম এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ নিতে পারেননি। তবে তাদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে, শিগগিরই তারা শপথ নেবেন বলে জানা গেছে। – ডিডাব্লিউ