দিগন্ত টিভিসহ অন্য গণমাধ্যম বন্ধে অ্যাটকো চুপ ছিল : রিজভী

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, সিএসবি নিউজ, চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টেলিভিশন, দৈনিক আমার দেশ ও দৈনিক দিনকালের প্রকাশনা বন্ধের সময় অ্যাটকো চুপ ছিল। এতেই বুঝা যায় তারা কারো নির্দেশে প্রভাবিত।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাতে নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, বিএনপি কতৃর্ক সময় টেলিভিশন ও একাত্তর টেলিভিশন বয়কটের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছে টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের অ্যাসোসিয়েশন (অ্যাটকো)। অ্যাটকো বলেছে, বিএনপি আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়ে ওই দুই টেলিভিশন চ্যানেল বয়কটের ঘোষণা গণমাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরুপ।

এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, কোনো গণমাধ্যম রাজনৈতিক দলের নেতার বক্তব্য ও রাজনৈতিক ঘটনা সমূহ প্রচার করতে পারে, বিকৃত করতে পারে না। গণমাধ্যম নিজেই যদি ফ্যাসিবাদের প্রচারক হয়, তাহলে সেটি হবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে ভয়ানক হুমকি ও আতঙ্কের। একদিকে বিএনপি’র নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার ও কুৎসা রটনা করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-নেত্রীরা। এদের সাথে তাল মিলিয়ে কিছু গণমাধ্যম নিরপেক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন না করে নিজেরাও কুৎসার নামে নানা কাহিনী তৈরি করে প্রচার করছে, যা সম্পূর্ণরুপে সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিপন্থী।

তিনি বলেন, উল্লিখিত দু’টি টেলিভিশনে শুধুমাত্র টকশো বর্জনের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু অন্যান্য কার্যক্রম যেমন সংবাদ সংগ্রহে তো কোনো ধরনের অসহযোগিতা করা হয়নি এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, টকশো’র সঞ্চালকরা এমনভাবে টকশো পরিচালনা করেন যেখানে বিএনপি, জিয়া পরিবার ও চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পর্কে কুৎসা রটনাকে আরো জোরালো করেন। তাদের মূল দায়িত্বটাই থাকে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে নিজেকে একজন খাঁটি আওয়ামী রাজনীতির অনুসারী হিসেবে তুলে ধরা। ওই দুটি টেলিভিশন টকশো নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। মূলত তাদের টকশো পরিচালিত হয় গণমাধ্যমের নীতিমালা উপেক্ষা করে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রধানমন্ত্রী ২১ আগস্ট নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে মনে হয়েছে এটি বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। মানুষের ভোটাধিকার, ব্যক্তি স্বাধীনতা তথা বহুমাত্রিক গণতন্ত্রকে উচ্ছেদ করার পাশাপাশি গুম, ক্রসফায়ার, অপহরণ, গায়েবি মামলা, ব্যাংক ডাকাতি, রিজার্ভ চুরি, অর্থ পাচারের সাথে সম্পৃক্ত দলের নাম আওয়ামী লীগ। জিয়া পরিবারকে নিয়ে কোনো সভ্য রাজনৈতিক নেতা এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারেন না। শেখ হাসিনা বিশ্বাস করে অশান্তি, হিংসা আর রক্তপাতকে। তিনি হানাহানিকেই টিকিয়ে রেখেছেন অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে বাদ দিয়ে।

শেখ হাসিনা ভোটারদের কাছে যেতে পারবেন না বলেই মহানগর, জেলা, উপজেলায় খুন-জখম দেখতে ভালবাসেন। শেখ হাসিনা গণতন্ত্র এবং সুষ্ঠু ভোটের প্রতি এক ধরনের ক্রোধ থেকে তার প্রত্যহ জন্ম নেয় প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের সব ভয়াবহ ঘটনা। বিএনপি’র মিছিলের আওয়াজ পেলেই গুলি চালাতে নির্দেশ দেন তিনি। আর বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের রক্তাক্ত শরীর দেখলে তিনি পৈশাচিক আনন্দ লাভ করেন। তিনি আন্দাজ করে ফেলেছেন যে, রক্তাক্ত আক্রমণ চালিয়ে তিনি আর ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন না। তাই বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে রুটিন মাফিক বিষোদগারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা এখন যে চিৎকার দিচ্ছেন সেটি হলো প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে যেমন দ্বিগুণ তেজে জ্বলে ওঠে সেরকমই। জিয়া পরিবারকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর গতকালের বক্তব্য জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *