বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ৩৫ ঘণ্টার বেশি সময় পর কারাগারে গেলেন সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে করে তাঁকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
এর আগে রমনা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শামসুজ্জামানের জামিন আবেদন নাকচ করা হয়।
প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কর্মকার। শুনানিতে ছিলেন আরেক আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনা হয় শামসুজ্জামানকে। পরে রমনা থানা-পুলিশ তাঁকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর তেজগাঁও ও রমনা থানায় দুটি মামলা হয়েছে।
বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ২০ ঘণ্টার বেশি সময় পর গতকাল বুধবার মধ্যরাতে শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এই মামলার প্রধান আসামি। সেই মামলাতেই শামসুজ্জামানকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আদালতে আনা হয়। এই মামলার বাদী আইনজীবী আবদুল মালেক (মশিউর মালেক)। তিনি নিজেকে হাইকোর্টের আইনজীবী পরিচয় দিয়েছেন।
গতকাল ভোর চারটার দিকে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের আমবাগান এলাকায় শামসুজ্জামানের বাসায় যান ১৪ থেকে ১৫ জন। নিজেদের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয়ে শামসুজ্জামানের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তাঁর ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দুটি মুঠোফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক নিয়ে যান। পরে শামসুজ্জামানকে নিয়ে যান তাঁরা।
২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে প্রকাশের সময় দিনমজুর জাকির হোসেনের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি ‘কার্ড’ তৈরি করা হয়। সেখানে উদ্ধৃতিদাতা হিসেবে দিনমজুর জাকির হোসেনের নাম থাকলেও ছবি দেওয়া হয় একটি শিশুর। পোস্ট দেওয়ার ১৭ মিনিটের মাথায় অসংগতি নজরে আসে এবং দ্রুত তা প্রত্যাহার করা হয়। পাশাপাশি প্রতিবেদন সংশোধন করে সংশোধনীর বিষয়টি উল্লেখসহ পরে আবার অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনের কোথাও বলা হয়নি যে উক্তিটি ওই শিশুর; বরং স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে, উক্তিটি দিনমজুর জাকির হোসেনের। সুত্র: প্রথম আলো