সরকার পতনের একদফা দাবিতে ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছে। আজ শুক্রবার (১১ আগস্ট) দুপুরে পৃথকভাবে এ গণমিছিল করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিলে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন। রাজধানীতে প্রতিবাদী জনতার উপচেপড়া ভীড় এবং বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
গণমিছিল উপলক্ষে বেলা ১টা থেকে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী জমায়েত হতে থাকেন বাড্ডা ও কমলাপুরে। বিভিন্ন শাখা ও অঙ্গ-সংগঠনের ব্যানারে নেতাকর্মীরা আসেন দলে দলে। এসময় সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে গণমিছিল প্রাঙ্গণ মুখরিত করেন তোলেন তারা।
বাড্ডার সুবাস্তু মার্কেটের সামনে থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি গণমিছিল শুরু হয়। মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এবার নির্বাচন নিয়ে কোন খেলা খেলতে দেয়া হবে না। এবারের আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটানো হবে। ক্যারিকেচার করে ২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করে ২০২৩-এ ক্ষমতায় যেতে দেওয়া হবে না। মানে মানে সরে না গেলে রাজপথেই সরকারের পতন ঘটানো হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে আমাদের দমিয়ে রাখতে চায়। কোনো জেল-জুলুম, ভয়ভীতি, কারাগার আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। এ দেশের মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই এই ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করা হবে।
তিনি বলেন, ‘সরকার আর নির্বাচন কমিশন মিলে নতুন দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে, যে দল দু’টি কেউ চেনে না। কারণ এই আওয়ামী লীগ সরকার এই দল দিয়ে নির্বাচন নির্বাচন খেলা খেলতে চায়। কিন্তু এবার সেই খেলা খেলতে দেওয়া হবে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবার আমাদের লড়াই জীবনপণ লড়াই। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই দানবকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সেখানে আমরা একটা নতুন রাষ্ট্র তৈরি করব। সেখানে মানুষ যেন সম্মানের সঙ্গে, ইজ্জতের সঙ্গে বেঁচে থাকতে পারে তার ব্যবস্থা করব। আমার যুবক ছেলেরা যাতে চাকরি পায় সেই ব্যবস্থা করব, সবাই যেন ব্যবসা-বাণিজ্য করে সেই ব্যবস্থা করব।
এসময় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি কমলাপুর এলাকা থেকে গণমিছিল শুরু করে। মিছিলের শুরুতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস নির্বাচন প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, আপনারা যে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন, সেই নির্বাচনকে অবশ্যই প্রতিহত করবো। আর এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। হতে দেয়া হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গত ১৫ বছর ধরে লড়াই করছি। অনেক সাথীকে হারিয়েছি। অনেকে গুম অথবা পঙ্গু হয়েছেন। অনেক নারী নির্যাতিত হয়েছেন। বহু লোকের জেল হয়েছে এবং এখনো জেল খাটছে। এই অবস্থায় ফ্যাসিবাদি সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যায়না। যত তাড়িতাড়ি সম্ভব তাদের বিদায় করতে হবে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আমরা রাজপথে আছি। রাজপথে থাকবো। এই সরকার বিদায় না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন হতে পারে না। এই সরকারকে বিদায় নিতেই হবে। নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ ইসির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।