জীবনে যা অর্জন করেছি, মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দিয়েছি : দানবীর রাগীব আলী

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দানবীর রাগীব আলীর জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতস্ফূর্তঃ ও প্রাণবন্ত আয়োজনে মুগ্ধ হয়েছেন প্রবীন এই জনহিতৈষী। নিজের কর্মসাধনার স্মৃতিচারণ করে বললেন, জীবনে যা অর্জন করেছি, মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দিয়েছি। এতেই আমি পরিতৃপ্ত।

শুক্রবার সিলেট স্টেশন ক্লাবে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের নানা আয়োজন। সম্মাননা জানাতে পরানো হয় উত্তরীয়। কাটা হয় জন্মদিনের কেক। শিল্প-সাহিত্যের বরেণ্য পৃষ্ঠপোষকের হাতে তুলে দেয়া হয় উপহার। আলোচনা হয় দেশে ও প্রবাসে কর্মবীর রাগীব আলীর সংগ্রামী জীবন ও অবিরাম মানব সেবার কথা। প্রবাসে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তার কথা আলোচনা হয়। চা শিল্প উদ্যোক্তা, সংবাদপত্র প্রকাশ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, মাদ্রাসা, মসজিদ, খেলার মাঠ, মার্কেট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা ও সফলভাবে পরিচালনায় তার পারঙ্গমতা সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই তার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করেন।

রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের সিইও বনমালী ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. লুৎফর রহমান।

অনুষ্ঠানে সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন বলেন, একজন নন্দিত ব্যক্তির জন্মদিন পালন করতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়। যারা ভাল কাজ করেন আল্লাহ তাদের সহায় হবেন। দানবীর ড. রাগীব আলী সকল ভাল কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তাঁর কারণে সিলেট তথা গোটা দেশের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তিনি আমাদের প্রেরণার উৎস।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আবেদ হোসেন বলেন, রাগীব-রাবেয়া ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে শতাধিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান দানবীর ড. রাগীব আলীর জন্ম না হলে অত্র এলাকার মানুষ সেবামূলক কর্মকান্ড থেকে বঞ্চিত হতো। শতবছর পার হলেও তিনি মানসিক দিক দিয়ে এখনও তরুণ। মানুষের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছেন। তার সেবামূলক কার্যক্রম ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে লিডিং ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, শতবর্ষী একজন কর্মবীরের জন্মদিন উদযাপন করা আনন্দের বিষয়। দক্ষতা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে দানবীর রাগীব আলীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. একেএম দাউদ, জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ তারেক আজাদ, দৈনিক সিলেটের ডাকের বার্তা সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস, লিডিং ইউনিভার্সিটির পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মো. কবির আহমদ, রাগীব-রাবেয়া জামেয়া ইসলামিয়া গোয়াবাড়ি মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আল মাহমুদী, মধুবন সুপার মার্কেটের ম্যানেজার সাজ্জাদুর রহমান শিমুল।

লিডিং ইউনিভার্সিটির সেকশন অফিসার জসীম আল ফাহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে দানবীর রাগীব আলীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান লামাকাজী রাগীব-রাবেয়া হাইস্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ছিফত আলী, হাজী রাশীদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, দোয়ারাবাজার বালিউড়া বাজার রাগীব-রাবেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, হাওলাদারপাড়া রাগীব-রাবেয়া বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক দিলীপ চক্রবর্তী, শাহজালাল রাগীব-রাবেয়া প্রতিবন্ধী ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেপী রানী দে, রাগীব-রাবেয়া নাগরী ইনস্টিটিউটের কাজী শাহেদ বিন জাফর, রাগীব-রাবেয়া সেলাই প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক শান্তি দাস প্রমুখ।

দানবীর রাগীব আলীর জন্মদিন উপলক্ষে স্ব-রচিত গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত বিশিষ্ট শিল্পী রাখী ভৌমিক। নিবেদিত কবিতা পাঠে অংশ নেন মো. একতার হোসেন, মো. লোকমান আলী, সত্যজিৎ ভট্টাচার্য মিঠুন, মো. মাযহারুল ইসলাম আযাদী ও কাজী শাহেদ বিন জাফর। রাগীব আলীসহ অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করেন তানহা রহমান ও মায়িশা রহমান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মো. লুৎফর রহমান বলেন, মানুষের কল্যাণের জন্যই দানবীর রাগীব আলী এই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে চলেছে বলে জানান।

সভাপতির বক্তব্যে বনমালী ভৌমিক বলেন, শিক্ষা সমাজসেবাসহ সকল মানবিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত দানবীর রাগীব আলীর প্রতিটি প্রতিষ্ঠান। তাঁর পরামর্শ ও সহযোগিতায় ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম আরো বেগবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন ফাহিম আহমদ। মোনাজাত পরিচালনা করেন লিডিং ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. জিয়াউর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *