জটিল সমীকরণে ইউক্রেন যুদ্ধ

ইউরোপ এশিয়া সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

ইবনে নূরুল হুদা: ইউক্রেন যুদ্ধে মাঝে মাঝে সামান্য আশার আলো দেখা গেলেও তা কখনোই বাস্তবতা পায়নি বরং যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ছে। সর্বশেষ তুরস্কের মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত আশাবাদী হওয়ার মত কোন অগ্রগতি হয়নি বরং আলোচনা সাফল্য নিয়ে খানিকটা হতাশাই ব্যক্ত করেছে রাশিয়া। মূলত, যুদ্ধের এক মাস পূর্তি হয়েছে গত ২৪ মার্চ। রাশিয়ার সামরিক সূত্র জানিয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের ডনবাস অঞ্চলের ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ নিশ্চিত করাই হবে এখন থেকে তাদের প্রধান লক্ষ্য। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি বলছে, তাদের ‘বিশেষ সেনা অভিযানের’ দু’টো ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্য ছিল-একটি পুরো ইউক্রেন এবং অন্যটি শুধুমাত্র ডনবাস। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রথম পর্ব অনেকাংশেই শেষ হয়েছে। এখন পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চল পুরোপুরি ‘মুক্ত’ করার দিকে নজর দেয়া হবে।

যুদ্ধের ভয়াবহতায় ইউক্রেনে বহু স্থাপনা ইতোমধ্যেই ধ্বংস হয়েছে। বেসামরিক লোক হতাহতের পাশাপাশি দেশ ছেড়েছেন প্রায় ৩৮ লাখ মানুষ। দেশটির অর্থনীতিও ভেঙ্গে পড়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশে ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে স্থল, আকাশ ও জলপথে ইউক্রেনে হামলা চালানো শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয় রুশ সেনারা। টানা এক মাস ধরে যুদ্ধ চললেও এখনো বড় কোনো শহর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই রাশিয়ার। বিষয়টিকে এই পরাশক্তির বড় ধরনের ব্যর্থতা হিসাবে দেখা হচ্ছে।

মূলত, পূর্ব ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর নির্দেশের আগে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত দু’টি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে পুতিন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা করেন। তার ভাষায়, পূর্ব ইউক্রেন এক সময় রাশিয়ার ভূমি ছিল। পুতিনের এ ঘোষণার পর শুরু হয় ইউক্রেন আভিযান।

রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আসতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের কাছ থেকে। আন্তর্জাতিক সুরক্ষিত অর্থ লেনদেন নেটওয়ার্ক ‘সুইফট’ থেকে বাদ পড়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন আগ্রাসনের পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেল ও ভোগ্যপণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। খোদ রাশিয়াতেও বেড়েছে সব পণ্যের দাম। এদিকে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বড় কয়েকটি শহর। বন্দরনগরী মারিউপোলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন অনেক মানুষ।

চলমান যুদ্ধ বন্ধে দফায় দফায় আলোচনা হলেও এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। যুদ্ধে প্রাণহানি বন্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা তুরস্কে দফায় দফায় আলোচনায় বসেন। কিন্তু কোন অগ্রগতি না থাকায় তা শুধুই নিয়ম রক্ষার আলোচনায় পরিণত হয়েছে। আলোচনার ব্যাপারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মন্তব্য হলো, আলোচনায় রাশিয়ানরা একটি ‘মৌলিকভাবে ভিন্ন পদ্ধতি’ অবলম্বন করেছে। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন দাবি করেছেন আলোচনায় ‘কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন’ হয়েছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রাশিয়া এখন পর্যন্ত একটি আলটিমেটাম দিয়ে রেখেছে। ইউক্রেন যদি সামরিকীকরণে সম্মত হয়, ন্যাটোতে যোগদানের উচ্চাকাক্সক্ষা পরিত্যাগ করে এবং পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার অঞ্চল গঠনের দাবিকে স্বীকৃতি দেয় তাহলেই কেবল হামলা বন্ধ হবে বলে আলোচনায় শর্ত দিচ্ছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেন রাশিয়ার এই শর্ত বরাবরই জোরালেভাবে প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।

এ ব্যাপারে থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) রাশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ওলেগ ইগনাটভ অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, এটা এক ধরনের অচলাবস্থা বা স্থবিরতা। কারণ, রাশিয়া এখনও আশা করে যে ইউক্রেন তার দাবি মেনে নেবে। তিনি আরও বলেন, উভয়পক্ষই সামরিক পরিস্থিতিকে প্রধান দৃশ্যপট হিসেবে বিবেচনা করছে। ইউক্রেন এই যুদ্ধে হারছে না এবং রাশিয়া এই যুদ্ধে জিতছে না। ফলে জটিল সমীকরণেই পড়েছে চলমান রুশ-ইউক্রেন সামরিক সংঘাত।

ব্রিটিশ থিংক ট্যাংক রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (আরইউএসআই) রাশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ নাটিয়া সেসকুরিয়া মনে করেন, যখন দুই পক্ষ মানবিক করিডোর; এমনকি অস্থায়ী স্থানীয় যুদ্ধবিরতিতে একমত হওয়ার জন্য লড়াই করছে, তখন কূটনৈতিক সমাধান বাস্তবসম্মত নয়। তার ভাষায়, এই মুহূর্তে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাধিক লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করছে এবং যদি তারা কূটনৈতিক টেবিলে ইউক্রেনীয়দের এই শর্তগুলো মেনে নিতে বাধ্য করতে সক্ষম হয়, তবে অবশ্যই রাশিয়া যা চাইবে তা পাবে। কিন্তু যদি তারা তা করতে না পারে, তাহলে যুদ্ধ চলতেই থাকবে।

প্যারিসভিত্তিক থিংক ট্যাংক মন্টেইগনে ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ মিশেল ডুক্লোসও এ বিষয়ে একমত হয়ে বলেন, সেখানে যা ঘটছে তাতে মনে হচ্ছে কূটনৈতিক সমাধান গৌণ বিষয়। চলমান সংঘাতে এরই মধ্যে রুশ সেনারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, চলমান সংঘাতে ১২শর বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। এতো ক্ষয়ক্ষতির পরও রুশ বাহিনী ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের চারপাশ থেকে অগ্রসর হচ্ছে।

অবশ্য ইউক্রেনে সহজ জয়ের ভাবনায় বেশ ধাক্কা খেয়েছে রুশ বাহিনী। তারা এখন নিজেদের শক্তিক্ষয়ের বৃত্তে পড়েছে, প্রলম্বিত হতে যাচ্ছে যুদ্ধ। এতে ক্ষতি যা হওয়ার হচ্ছে বেসামরিক নাগরিকদের। এরই মধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এক কোটি মানুষ। এর মধ্যে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ৩৮ লাখ। ইউক্রেন যুদ্ধের এক মাসে এমন মূল্যায়ন এএফপিসহ বিভিন্ন বার্তা সংস্থার।

উল্লেখ, গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে এই আগ্রাসন শুরু হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমারা পুতিন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদেরসহ দেশটির ওপর তিন হাজারের বেশি অবরোধ দিয়েছে। এতে রাশিয়ার অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। অন্যদিকে রণাঙ্গনেও তারা কাক্সিক্ষত লক্ষ্য থেকে অনেকটা দূরেই রয়েছে। শুরুতে যতটা সহজে কিয়েভের পতন ঘটানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছিল, তা কিন্তু হয়নি।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধের মুখে স্থলপথে রুশ বাহিনীর অগ্রগতি থমকে গেছে। এরই মধ্যে ‘ইউক্রেনে পুতিনের পিঠ ঠেকে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবির ভাষ্য, নৈতিক জোরই শুধু হারাতে বসেননি রুশ সেনারা, তাঁদের খাদ্য ও জ্বালানিতেও টান পড়েছে। ইউক্রেনে পা রাখার পর থেকেই রাজধানী কিয়েভের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ওপর সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছে রুশ বাহিনী। তাদের আশা ছিল, কিয়েভের পতনের সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির জমানা শেষ হবে। ফরাসি এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার মতে, যুদ্ধে রুশ বাহিনীর সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছে। সঠিক নিশানায় হামলাও করতে পারছে না তারা। তাঁর কথায়, এটা রাশিয়ার নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণনীতির সত্যিকারের ঘাটতি এবং বড় ধরনের দুর্বলতা।

চলমান যুদ্ধে কতসংখ্যক সেনা এরই মধ্যে নিহত হয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া কঠিন। তবে পেন্টাগনের ধারণা, প্রথম মাসে সাত হাজারের মতো রুশ সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ দাবি করেছেন, ধ্বংসযজ্ঞ চালানো সত্ত্বেও পুতিনের অভিযান আটকা পড়েছে। প্রাণহানীর প্রশ্নে কিয়েভের ভাষ্য হলো, ১২ মার্চ পর্যন্ত তাদের ১ হাজার ৩০০ সেনা মারা গেছেন। তবে পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, সত্যিকারের সংখ্যার চেয়ে অনেকটাই কম করে বলা হচ্ছে।

তবে চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার সৈন্যরা কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জন করতে পারেনি বরং অনেকটা চোরাবালিতেই আটকা পড়েছেন। তারা সামনে এগুতে না পেরে আশপাশের লোকালয় অবরোধ করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনের জনগণের মনোবলে আঘাত করতে তাঁরা এ কৌশল বেছে নিয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় এক কোটি ইউক্রেনীয় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের হিসাবে, প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ দেশ ছেড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, ‘রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী যত প্রতিরোধের মুখোমুখি হবে, বিমানবাহিনী তত বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠবে এবং তারা যত্রতত্র ক্ষমতার অপব্যবহার করবে।’

যুদ্ধে সাফল্য বলতে এক মাসের অভিযানে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের খেরসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা শুধু দখলে নিতে পেরেছে রুশ বাহিনী। মারিউপোল অবরুদ্ধ করলেও দখল নিতে পারেনি। উত্তরাঞ্চলীয় শহর খারকিভে টানা বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে শহরটির দিকে ধীরে এগোনোর জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন রুশ সেনারা। মিকোলাইভে গোলা ছুঁড়ছে পদাতিক বাহিনী।

চলমান যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে এবং উভয় পক্ষ দফায় দফায় আলোচনা চালালেও এখন পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। রাশিয়ার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের প্ররোচনায় যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে না ইউক্রেন। ইউক্রেন আবার দায়ী করছে রুশ প্রেসিডেন্টকে। পশ্চিমা বিশ্লেষকেরা বলছেন, যদি অস্ত্রবিরতিতে রাজিও হয় মস্কো, তবে তা হতে পারে নিজেদের জন্য সময় বের করে পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করা লক্ষ্যে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক সিএনএনের মাইকেল কফম্যান লিখেছেন, ‘যদি শক্তিক্ষয়ের চক্রে পড়ে রুশ বাহিনী, তবে যুদ্ধের পরের পর্ব হয়ে উঠতে পারে আরও বেশি কুৎসিত। রুশ বাহিনী বেসামরিক এলাকায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ করবে। তারা হয়তো তাদের পারদর্শিতার ঘাটতি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে ঢাকার চেষ্টা চালাবে।’ এমন দাবিকে যৌক্তিকই মনে করছেন সামরিক বোদ্ধারা।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের উইলিয়াম আলবার্কও মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমে যদি কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো না যায়, তাহলে শক্তিক্ষয়ের চক্রে পড়বে রুশবাহিনী। যেকোনো মূল্যে কিয়েভের অস্ত্রবিরতি মেনে নেওয়ার বিরোধিতা করেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, ‘সবচেয়ে খারাপ দিক হলো ইউক্রেনীয় জনগণকে দুর্ভোগ থেকে রক্ষায় যুদ্ধ বন্ধে পশ্চিমাদের আকাক্সক্ষা রুশদের জন্য সহায়ক হবে। তারা একে সুযোগ হিসেবে নিতে পারে। অস্ত্রবিরতি কাজে লাগিয়ে নিজেদের শক্তি সঞ্চয় করবে তারা।’

এদিকে আশা-নিরাশার দোলাচলেই গত ২৯ মার্চ তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দোলমাবাহচে প্রাসাদে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ বলা যেতে পারে বলে মনে করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু রাশিয়ার পক্ষে বলা হচ্ছে ভিন্নকথা। ক্রেমলিন জানিয়েছে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনে ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে দুই পক্ষের আলোচনায় কোনো ফল আসেনি। বুধবার মস্কোতে ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান। পেসকভ জানান, রাশিয়া বৈঠক থেকে আশাদায়ক বা ফলদায়ক কিছুই দেখছে না। এর জন্য আরো লম্বা সময় কাজ করতে হবে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, যুদ্ধবন্ধে রুশ-ইউক্রেন দফায় দফায় আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। সর্বশেষ আলোচনায় রাশিয়া ইউক্রেনের কিছু শহর থেকে সৈন্য কমানোর কথা ঘোষণা দিলেও অন্য শহরগুলোতে হামলা জোরদারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। চলমান যুদ্ধ নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে যুদ্ধ চলার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বোদ্ধামহল মনে করছেন, যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে সাধারণ জনগণকে বাঁচানোর জন্য উভয়পক্ষকে খোলা মন নিয়ে আলোচনার টেবিলে সমাধান করা উচিত। নিয়ম রক্ষার আলোচনায় কোন সমাধান বেড়িয়ে আসবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *