সাঈদ চৌধুরী
এক সময়ের সাড়া জাগানো (অধুনালুপ্ত) সাপ্তাহিক সিলেট সমাচার ও দৈনিক জালালাবাদীর সাহসী সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ খান চলে গেছেন না ফেরার দেশে। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) রাত পৌনে ১২টায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না-লিল্লা-হি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রা-জিউ’ন।
আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দৈনিক ইত্তেফাকে কাজ করেছেন আব্দুল ওয়াহেদ খান। আধুনিক সংবাদপত্রের রূপকার কিংবদন্তি সাংবাদিক দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার একান্ত সান্নিধ্য পেয়েছেন দীর্ঘকাল। মানিক মিয়ার সংগ্রামদীপ্ত জীবন থেকে তিনি প্রচন্ড দৃঢ়তা ও দায়িত্ববোধ লাভ করেন।
তারপর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ওয়াহেদ খান ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সিলেট ব্যুরো প্রধান। ১৯৭৭ সালে নিজেই প্রকাশ করেন সাপ্তাহিক সিলেট সমাচার। যে কাগজ সিলেটের সাংবাদিকতাকে একেবারে বদলে দিয়েছিল। ওয়াহেদ খানের তত্বাবধানে একঝাক মেধাবী সাংবাদিকের কলমে সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সমাচার ছিল সোচ্চার। অন্তর্ভেদী সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক আবদুল হামিদ মানিকের মত শক্তিমান লেখককে তিনি সেখানে যুক্ত করেছিলেন। মানিক ভাই সুবক্তা হিসেবেও সাংবাদিকতার সমান্তরালেই বহমান। তাঁর বক্তব্য পরিশীলিত ও আধুনিক রুচিঋদ্ধ। উচ্চারণও চমৎকার। তার লেখা ও কথায় আকর্ষণ অফুরন্ত।
ওয়াহেদ খান সাপ্তাহিক যুগভেরী সম্পাদক আমীনূর রশীদ চৌধুরীর গুণমুগ্ধ ছিলেন। তাঁর জীবনাচারের যথেষ্ট প্রভাব মি. খানের মাঝে ছিল। ‘সিলেট বন্ধু’ আমিনুর রশীদ চৌধুরীর জীবন ছিল স্বকীয়তায় ভরপুর। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন সম্পাদক। সিলেটের সাহসী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ। তার বলিষ্ট সম্পাদনায় প্রাচীনতম সাপ্তাহিক যুগভেরী সিলেট অঞ্চলে গণমানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে ওঠে। পত্রিকা মানুষের অধিকারের কথা বলে আর সম্পাদক অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে বেগবান করেন। সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে আমিনুর রশীদ চৌধুরী তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি ছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৬৫ সাল থেকে ১১ বার প্রেসক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সিলেট প্রেসক্লাবের উন্নয়নে তার অবদান অনস্বীকার্য।
জালালাবাদ অঞ্চলের মানুষের অধিকারের বিষয়ে আব্দুল ওয়াহেদ খানও ছিলেন আপসহীন। ১৯৮৪ সালে দৈনিক জালালাবাদী প্রকাশ করে ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করেন তিনি। প্রখর বুদ্ধি ও শ্রমের মধ্য দিয়ে মিডিয়া জগতে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরী করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতার জন্য নানা মত ও পথের অনুসারী মানুষ তাকে বিশ্বাস করেছে। তার খাবরের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে।
আব্দুল ওয়াহেদ খান বাংলাদেশের সরকার প্রধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠনের আমন্ত্রণে দেশ-বিদেশের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর সাথে ওয়াহেদ খান ১৯৭৩ সালে ভারত সফর করেছেন। তখন শান্তিনিকেতনে একটা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ছিলেন। যখনই তার সাথে দেখা হত আমার সাহিত্য-সাংবাদিকতার খবর নিতেন আর শান্তিনিকেতনে বেড়ানোর গল্প করতেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দৃষ্টি ও দর্শনের কথা বলতেন। প্রকৃতির উপলব্ধি, সঙ্গীত এবং শিল্পকলার বিষয়ে দারুণ মুগ্ধতা প্রকাশ করতেন। গীতাঞ্জলি রেল মিউজিয়াম, বিশ্ব বাংলা হাট, প্রকৃতি ভবন, আমার কুটির, কোপাই নদী, সৃজনী শিল্পগ্রাম, বল্লভপুর ডিয়ার পার্ক, বিশ্বভারতী, কলা ভবন, মিউজিয়াম ইত্যাদি তার মুখেই জেনেছি সেই ছেলে বেলায়। বহু পরে যখন দেখতে গেলাম, মনে হল ওয়াহিদ খানের আঁকা মানচিত্র নিয়ে হাটছি।
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে ওয়াহেদ খান বৃটেন ও জাপান সহ বিভিন্ন দেশে সফরসঙ্গী হয়েছেন। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন সহ আরো অনেক দেশে গিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট জিয়ার চমৎকার উক্তি সমূহ তিনি বিশ্লেষন করতেন। এম মাঝে একটি ছিল Money is not a problem. সে কথাটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন। তিনিও মনে করতেন, উদ্দেশ্য যদি সৎ হয় তবে টাকার কোন সমস্যা হয় না, সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য।
‘৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে, বাংলাদেশ বাঁচবে’। প্রেসিডেন্ট হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের উন্নয়নের এই স্লোগান পছন্দ করতেন ওয়াহেদ খান। আর তাঁকে বেশ ভালোবাসতেন প্রেসিডেন্ট এরশাদ। ব্যক্তিজীবনে ভীষণ রোমাঞ্চ প্রিয় ছিলেন এইচ এম এরশাদ। রাজনীতির মতো তার ব্যক্তিজীবনও ছিল রহস্যময়। কবিতাও লিখতেন তিনি। এসব নিয়ে ওয়াহেদ খানের গল্প শেষ হবার ছিলনা। প্রেসিডেন্ট এরশাদের সাথে মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, পাকিস্তান ও ভূটান সফরের মজার মজার কাহিনী শুনাতেন। আর এলবাম থেকে ছবি এবং স্মৃতিময় স্মারক সমূহ দেখাতেন।
মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর এম এ জি ওসমানীকে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরীর স্বপ্ন দেখতেন ওয়াহেদ খান। রাষ্ট্রীয়ভাবে বহু আগে এই কাজটি হওয়া উচিত ছিল বলে তিনি মনে করতেন। বরণীয় মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের নামের সাথ বঙ্গবীর যুক্ত করার ঘোরতর বিরোধী ছিলেন ওয়াহেদ খান। তিনি বলতেন, ওসমানীর পোষা কুকুর ‘মন্টি’র যোগ্যতাও নেই বাংলাদেশের বহু রাজনীতিকের। চলনে-বলনে আচরণে-উচ্চারণে ওসমানীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য সমূহ ওয়াহেদ খানের মুখে প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে।
হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর খুবই স্নেহভাজন ছিলেন ওয়াহেদ খান। আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে এই উজ্জ্বল নক্ষত্রের ভূমিকা তিনি তুলে ধরতেন অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে। ১৯৭১ সালে তাঁর কূটনৈতিক যুদ্ধের সফলতা বিশ্লেষন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানাকে বেলজিয়াম থেকে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে আনার ব্যবস্থা করেন। চরম দুঃসময়ে তিনি এবং তার সহধর্মিণী মেহজাবিন চৌধুরী পরম মমতায় তাদের দুই বোনকে আগলে রাখেন। সেসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগ করে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী দিল্লিতে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সে হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে যথার্থ মূল্যায়ন করছেনা বলেই তিনি মনে করতেন। তবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করায় তিনি উৎফুল্ল হয়েছিলেন।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ১৯৮৬ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪১তম অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তখন মি. চৌধুরীর সফর সঙ্গী ছিলেন ওয়াহিদ খান। একজন অকুতোভয় দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের একজন সফল স্পিকার, সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ঝানু কূটনীতিক হিসেবে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীকে নিয়ে একটি স্মারক প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। আমার শশুর বাড়ির আত্মীয় ও পারিবারিক ঘনিষ্টতার স্মৃতিচারণ করে একটা লেখা দিতে বলেছিলেন। লেখাটা দিয়েছিলাম, কিন্তু অসুস্থতার কারণে স্মারক আর বের করতে পারেন নি।
ওয়াহেদ খান স্থানীয় কিংবা জাতীয় পর্যায়ে যাদের সাথে কথা বলতেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ইনপুট দিতে পারতেন। বন্ধু ও সহকর্মীদের ভালো পরামর্শ দিতেন। তাঁর এক ধরনের অভিভাবকত্ব সহযোদ্ধাদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
আব্দুল ওয়াহেদ খান ১৯৭৯ সালে এসোসিয়েট প্রেস অব আমেরিকা আয়োজিত কনফারেন্সে অংশ নিয়েছেন। তিনি মালয়েশিয়ায় কমনওয়েল্থ জার্নালিষ্ট কনফারেন্সে বাংলাদেশ থেকে এককভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘের ৪১তম অধিবেশনের যোগদান করেছেন।
আন্তর্জাতিক সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত রিজিওনাল এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নেয়ার জন্যে ১৯৮৬ সালে ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সিঙ্গাপুর সফর করেন এবং চিয়াংমাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কল্যাণ বিভাগ ও আন্তর্জার্তিক সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে ১৯৯২-৯৩ সালে হংকং, মালয়েশিয়া, বৃটেন,কানাডা, আমেরিকা, ও থাইল্যান্ড সফর করেন।
সিলেটে ইংলিশ মিডিয়াম ইন্টারন্যাশনাল স্কুল প্রতিষ্ঠায় অগ্রগণ্য ছিলেন ওয়াহেদ খান। সিলেট খাজাঞ্চীবাড়ী ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে সম্পৃক্ত থাকা সত্বেও আমাকে নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠায় সামগ্রীক সহায়তা করেছেন। ১৯৯৭ সালে সিলেটে ইংরেজি শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করি। আমার শিক্ষা কার্যক্রম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি অবহিত হয়ে বেশ আগ্রহী হয়ে ওঠেন শহরের জিন্দাবাজার কাজী ম্যানশনের সত্তাধিকারি ও এপেক্স বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট কাজী এনাম উদ্দিন আহমদ। তিনি তার বন্ধু বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কয়সর জাহান সহ আরো কয়েকজনকে সাথে রাখার অনুরোধ করেন। এভাবে আস্তে আস্তে আমাদের আরো ক‘জন বন্ধুও সম্পৃক্ত হন। প্রতিষ্ঠিত হয় বৃটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (বিবিআইএস)। প্রথম বছরেই নার্সারী থেকে জিসিএসই (ওলেভেল) পর্যন্ত ক্লাস চালু হয় এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলে জিসিএসই পরীক্ষায় শিক্ষার্থিদের সাফল্য সবাইকে চমকে দেয়।
১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় কম্পিউটার প্রেগ্রামিং প্রতিযোগিতায় বিবিআইএস এর প্রতিযোগিরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে ৪র্থ স্থান দখল করে বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১৪তম এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ১৮তম হয়েছিল। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ডাইরেক্টর ও রেক্টর হিসেবে আমার তত্তাবধানে সুদক্ষ শিক্ষক মন্ডলীর প্রচেষ্টার ফলেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছিল। তখন ওয়াহিদ খান আমাদের বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। এই সময় ( ১৯৯৮ সালের ২৫ জুলাই) ব্রিটিশ হাই কমিশনার ডেভিড সি ওয়াকার বিবিআইএস পরিদর্শন করে এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিবিসি’র বিখ্যাত সাংবাদিক ফ্রান্সেস হ্যারিসন একই সালের ৫ আগস্ট আমার সাক্ষাৎকার সহ বিবিআইএস এর সামগ্রীক কার্যক্রমের বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। সাথে ছিলেন বিবিসির সিলেট প্রতিনিধি ও দৈনিক সিলেটের ডাকের নির্বাহী সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুস সাত্তার। তখন অনেক ঘনিষ্ট অগ্রজ সাংবাদিককে ঈর্ষাকাতর হতে দেখেছি। কিন্তু ওয়াহিদ খান এবং আমার সাংবাদিকতায় প্রেরণা সঞ্চারক হারুনুজ্জামান চৌধুরীর কাছ থেকে পেয়েছি প্রাণখোলা উৎসাহ ও সমর্থন।
আবদুল ওয়াহেদ খান ১৯৮৮ সালে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এসময় তিনি সংসদের উন্নয়ন এবং সাহিত্য-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক গতি সঞ্চার করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন পরিচালনার সঙ্গেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।সমাজ উন্নয়নমূলক অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথেও সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।
সিলেট শহরতলী দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকার বারখলায় জন্মেছেন আব্দুল ওয়াহিদ খান। এই এলাকার মানুষের মাঝে এক ধরনের বেপরোয়া ভাব লক্ষণীয়। তিনিও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। সম্ভবত এ কারণে কারো অন্যায় আবদার বা অপকর্ম বরদাস্ত করতেন না। প্রশাসন বা রাজনৈতিক মহলের হুমকি ধমকি তোড়াই কেয়ার করতেন।
প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ওয়াহেদ খান জীবনের নানা ঘটনা বর্ণনা করতেন খুবই রসঘন ভাবে। তার শ্রুতিমধুর বাক্যের ধ্বনিবিন্যাসে এক ধরনের মোহময় আবেগ সৃষ্টি হত।
সাহসী সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ খানকে নিয় অনেক স্মৃতি রয়েছে। বড় পরিসরে লেখার আশা রাখি। তিনি স্ত্রী নাজনীন হক খান, এক ছেলে ও দুই মেয়ে সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতবাসী করুন। আমীন॥
* সাঈদ চৌধুরী সময় সম্পাদক, কবি ও কথা সাহিত্যিক।