বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন,গুম মানবতাবিরোধী অপরাধ, যা মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। বাংলাদেশে নজিরবিহীন গুমের ঘটনায় লক্ষ-লক্ষ দেশবাসীর মতো আমিও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে এটি প্রয়োগ করা হয়। শেখ হাসিনার দু:শাসনে গুমকে ব্যবহার করা হয়েছে জনসমাজে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য। নির্ভরযোগ্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো একযোগে প্রকাশ করেছে যে, ২০০৯ সালের জানুয়ারী থেকে এখন পর্যন্ত সাত শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো গুম করেছে। এটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক, আজ পর্যন্ত একটি ঘটনারও ন্যায়বিচার পাওয়া যায়নি।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৩০ আগস্ট ২০২৪) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, এই নিখোঁজ মানুষগুলো ছিলেন তাদের পরিবারের প্রাণপ্রিয় সদস্য। তাদের স্বপ্ন, ভালোবাসা ও সুন্দর ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। অদৃশ্য মানুষগুলো কোথায় আছে আমরা জানিনা, তবে রেখে গিয়েছে মর্মান্তিক ও বেদনাবিধুর বাংলাদেশ, যেখানে আমাদের অর্জিত মানবাধিকার ও মূল্যবোধ লুণ্ঠিত হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গুম আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত। আইসিসি এর রোম সনদের ৭ (২) অনুচ্ছেদে গুমকে মনবতার বিরুদ্ধে একটি অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, আর মানবাধিকারের এই লঙ্ঘনের জন্য ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীতার উপর জোর আরোপ করা হয়েছে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা রাজনৈতিক দর্শণ, জাতি, ভাষা, নৃগোষ্ঠী, সংস্কৃতি, বর্ণ ইত্যাদীসহ রাষ্ট্রীয় সীমানাকে অতিক্রম করে গুম হওয়া মানুষগুলোর স্মরণে এবং সেই সঙ্গে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করি। আমি এই মনুষ্যত্বহীন অপরাধে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার জন্য দুনিয়াজুড়ে ঐক্য ও সংহতির আহবান জানাই।
তারেক রহমান বলেন, আমার দলের পক্ষ থেকে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করলে, বাংলাদেশে আর কোনো ব্যক্তি যেন গুম না হয়, সেটি নিশ্চিত করার জন্য, আমরা জাতিসংঘের কর্তৃক গৃহীত গুম প্রতিরোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেশন (আইসিপিপিইডি) অনুসারে প্রয়োজনীয় আইন প্রনয়ন করবো ইনশাল্লাহ। মানবতার বিরুদ্ধে এই গুরতর অপরাধের ন্যায়বিচার হতেই হবে।