গাজার ‘জনবহুল’এলাকায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৭৩ জন নিহত

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া শহরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৭৩ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গাজা উপত্যকার হামাস পরিচালিত কর্তৃপক্ষ।

শনিবার গভীর রাতে বোমাবর্ষণের পর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনেকে এখনও আটকা পড়ে আছেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। শহরের ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনাদের ব্যাপক গোলাগুলির খবর প্রকাশের পরই সর্বশেষ বিমান হামলা চালানো হয়।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ওই অঞ্চলের যোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেইত লাহিয়ায় উদ্ধার তৎপরতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। হামাস পরিচালিত সরকারের মিডিয়া অফিস বলছে, জনবহুল আবাসিক এলাকায় বোমা হামলা করা হয়েছে এবং এতে ৭৩ জন মারা গেছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সিও একই রকম তথ্য দিয়েছে।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, পুরো আবাসিক কমপ্লেক্সটি ওই হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে।বিশেষ করে ইসরায়েলি বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়া এলাকায় বোমাবর্ষণ করেছে। এর মধ্যে একটি শরণার্থী শিবিরও আছে। শুক্রবার সেখানে হামলায় ৩৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ওই এলাকায় কোনও সহায়তা আসেনি। ইসরায়েলের নিজেদের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সেপ্টেম্বরের তুলনায় সার্বিকভাবে ধ্বসে পড়েছে।

জাতিসংঘের শীর্ষ মানবিক সহায়তা কর্মকর্তা জয়সে এমসুয়া শনিবার বলেছেন, উত্তর গাজায় ফিলিস্তিনিরা ‘অবর্ণনীয় ভয়াবহতা’র মধ্যে রয়েছে এবং তিনি এসব নৃশংসতা বন্ধের আহবান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, শনিবার বৈরুতে অন্তত এক ডজন হামলা করেছে ইসরায়েল। দক্ষিণে শহরতলী এলাকায় একটি বহুতল ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য সেবা কর্তৃপক্ষ একজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে।

হেজবুল্লাহ ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট নিক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, শনিবার অন্তত দু’শো রকেট ছোঁড়া হয়েছে। শনিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন যে তাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এর আগে খবর আসে যে তার ব্যক্তিগত বাড়িতে ড্রোন হামলা হয়েছে।

“ইরানি প্রক্সি হেজবুল্লাহ আজ আমাকে ও আমার স্ত্রীকে হত্যার যে চেষ্টা করে, তা ছিল মারাত্মক ভুল,” সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ওই হামলার সময় মি. নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সেই বাড়িতে ছিলেন না এবং এতে কেউ আহত হয়নি।

গাজায় হামাস পরিচালিত কর্তৃপক্ষের হিসেবে, গত বছর অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ৪২ হাজার ৫১৯ জন নিহত এবং কয়েক লাখ মানুষ আহত হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনি শনিবার বলেছেন, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুতে ‘প্রতিরোধ সংগাম’ বন্ধ হবে না। “হামাস সক্রিয় আছে এবং সক্রিয় থাকবে,” তার বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

হামাসের ডেপুটি লিডার বলেছেন, হামাস আরও শক্তিশালী হবে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার না হলে ইসরায়েলি জিম্মিরা ফিরে যাবে না। বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *