গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে আইসিজে আদালতের বিচার

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার যুগান্তকারী গণহত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু করেছেন জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতের সভাপতি জোয়ান ডনোগু। গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে আইসিজে আদালতের বিচার শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছে। ইসরাইল তার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো হেগের জাতিসঙ্ঘ আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি ২০২৪) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় এই গণহত্যা মামলা শুনানি শুরু হয়েছে বলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে।

এর আগে আইসিজে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলা প্রত্যাখ্যান করতে বিদেশি কূটনীতিকদের চাপ দিয়েছে ইসরায়েল।

দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে; গাজার লোকজনকে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা মনে করে, এগুলো হলো গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের পরিকল্পিত গণহত্যার চেষ্টা।

সামাজিক যোগােযাগ মাধ্যমের প্রতিক্রিয়ায় বলা হচ্ছে, এই মামলায় ইসরায়েলের অবস্থান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিণাম হবে ভয়াবহ। এমনকি ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটি রুলিং হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের অনিয়া গ্যালাগার লিখেছেন, শতাব্দীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মামলার মধ্যে এটি নিঃসন্দেহে একটি। এই মামলাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীরা আদালতে মুখোমুখি হবেন ১১ ও ১২ই জানুয়ারি। আর গোটা বিশ্ব তাকিয়ে থাকবে তাদের দিকে।

ইসরায়েল কি গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা করছে? দক্ষিণ আফ্রিকা কিন্তু তাই মনে করে এবং সেই অভিযোগ তুলেই তারা গত ২৯শে ডিসেম্বর দ্বারস্থ হয়েছে ‘দ্য হেগ’-এর ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস (আইসিজে)-এর।

দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা ৮৪ পৃষ্ঠার ওই নথিতে বলে হয়েছে ইসরায়েলের কার্যকলাপ কিন্তু ‘চরিত্রগত ভাবে গণহত্যাই’ কারণ তারা গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের একটি বড় অংশকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল।

যুক্তি হিসাবে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ‘গণহত্যামূলক’ কার্যকলাপের মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা, গুরুতর মানসিক এবং শারীরিক ক্ষতি করা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা যাতে ‘সমগ্রভাবে ওই গোষ্ঠীর শারীরিক ক্ষতি হয়’। শুধু তাই নয়, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বক্তব্যে কিন্তু তাদের গণহত্যার উদ্দেশ্য প্রকাশ পেয়েছে বলেও উল্লেখ রয়েছে ওই নথিতে।

ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ অস্ট্রেলিয়ার আইন বিভাগের অধ্যাপক জুলিয়েট ম্যাকিনটায়ার জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার পেশ করা খসড়া ‘সচেতন ভাবে তৈরি’ এবং তাতে সমস্ত বিষয় ‘সবিস্তারে’ উল্লখ করা হয়েছে।

তিনি বিবিসিকে বলেন, “এটি (খসড়া) ইসরায়েলের সমস্ত সম্ভাব্য যুক্তির উত্তর দিতে পারে… এবং আদালতের এক্তিয়ারের বাইরের দাবির জবাবও দিতে সেটি প্রস্তুত।”

“দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছে, এই মামলাটি দায়ের করার আগে, বিভিন্ন জায়গায় তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের কথা জানিয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *