ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন সাম্প্রতিক গণআন্দোলনের সময় গণহত্যা চালানোর জন্য শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের দাবিতে বুধবার ও বৃহস্পতিবার সারাদেশে দুই দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতদিন গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে ততদিন তাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে তার দল।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে আমাদের সমর্থন করতে হবে। এটা গণঅভ্যুত্থান ও আন্দোলনের ফল। যতদিন এই সরকার গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে থাকবে ততদিন আমরা তাদের সমর্থন দিয়ে যাব।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণকে স্বস্তি দিয়ে নির্বাচন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি যুক্তিসঙ্গত সময়ও দেব, কারণ আমরা চাই গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক।’
গণতন্ত্রের জন্য গত ১৬ বছরে বিএনপি যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা ইতিহাসে বিরল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের অনেক সদস্যকে হত্যা, নিপীড়ন বা জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের পতনে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখায় ছাত্রদের ধন্যবাদ জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে প্রায় এক হাজার ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও আল্লাহ কঠোর, কারণ তাকে (শেখ হাসিনা) চূড়ান্তভাবে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়াবাড়ি পরিহার করার আহ্বান জানান ফখরুল। ‘অন্যথায় তারা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পারবে না’ উল্লেখ করে তিনি তাদের অপকর্মের জন্য স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দেন। গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের দাবি জানান তিনি।
দলের জন্য নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এমন কোনো অপকর্মে জড়িত না হওয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দেন বিএনপি মহাসচিব। তবে দ্বিতীয় স্বাধীনতা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং আওয়ামী লীগের যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহ্বান জানান তিনি।