কৃষ্ণসাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজে ইউক্রেনের মিসাইল হামলা

আন্তর্জাতিক সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

কৃষ্ণসাগরে একটি রুশ যুদ্ধজাহাজে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইউক্রেন। বুধবার (১৩ এপ্রিল) এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছেন ওডেসার গভর্নর ম্যাক্সিম মার্চেনকো।

ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলার কথা স্বীকার না করলেও জাহাজটিতে বিস্ফোরণ ও আগুন ধরে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।

ওডেসার গভর্নর দাবি করেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে কৃষ্ণসাগরে একটি রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রুশ এই যুদ্ধজাহাজটিতে ইউক্রেনের তৈরি নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে।

রাশিয়ার ওই যুদ্ধজাহাজের নাম মস্কভা। রুশ এই যুদ্ধজাহাজে হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ বলেন, রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর বহরের মস্কভা যুদ্ধজাহাজে একটি আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে।

রুশ ভূখন্ডে হামলা হলে কিয়েভের কমান্ড সেন্টারে হামলা হবে: মস্কো
রুশ সামরিক বাহিনী হুমকি দিয়ে বলেছে, ইউক্রেনের সৈন্যরা যদি রাশিয়ার ভূখন্ডে অব্যাহত হামলা চালায় তাহলে রাজধানী কিয়েভে কমান্ড সেন্টারে হামলা চালানো হবে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা ইউক্রেনীয় সেনাদের নাশকতা চালানোর এবং রাশিয়ার ভূখন্ডে হামলা চালানোর চেষ্টা দেখেছি। যদি এই ধরণের ঘটনা চলতে থাকে তাহলে রাশিয়ান বাহিনী কিয়েভসহ সকল কমান্ড সেন্টারে বিমান হামলা চালাবে।’

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর থেকে মস্কো অভিযোগ করে আসছে কিয়েভ বাহিনী রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় ভূখন্ডে হামলা চালাচ্ছে।

এই মাসের শুরুর দিকে রুশ বাহিনী কিয়েভের উত্তরাঞ্চল থেকে সরে এসেছে। এখন তারা পূর্ব ইউক্রেনের আরও বেশী এলাকা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের সেনারা এখন বন্দর নগরী মারিওপোল পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেনীয় সৈন্য এবং আজভ ব্যাটালিয়নের সদস্যদের ঘেরাও করে ফেলা হয়েছে। তাদের পালানোর কোনো সুযোগ নেই।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর মস্কভা দ্বিতীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ রুশ যুদ্ধজাহাজ, যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হলো। গত মাসে রাশিয়ার ল্যান্ডিং সাপোর্ট জাহাজ ওরস্ক ধ্বংস করে দেওয়ারও দাবি করেছিল ইউক্রেন।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলো বলছে, মস্কভা ১৯৮৩ সালে কমিশন লাভ করে। এই যুদ্ধজাহাজটি ৭০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম জাহাজ–বিধ্বংসী ১৬টি ভুলকান ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত।

এদিকে রাশিয়া দাবি করছে, মারিউপোলে ১৬২ কর্মকর্তাসহ ইউক্রেনের ৩৬তম মেরিন ব্রিগেডের ১ হাজার ২৬ জন সেনা আত্মসমর্পণ করেছেন। শহরটি পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এই আত্মসমর্পণের বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।আজভস্তাল শিল্প জেলায় এই সেনাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। জেলাটির দখল নেওয়ায় আজভ সাগরের প্রধান বন্দরের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে চলে যাবে। এতে তারা দক্ষিণাঞ্চলে স্থল করিডর চালু এবং দেশটির পূর্বাঞ্চলে তাদের দখলদারি বিস্তৃত করতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *