কুরআনের ছায়াতলে জীবন গঠন ।। আব্দুদ্দাইয়ান মুহাম্মদ ইউনুছ

ধর্ম ও দর্শন সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

(পূর্ব প্রকাশের পর)

আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন- সস্ত প্রশংসা রাব্বুল আলামীনের। সূরা আল ফাতিহার শুরুতে আল্লাহ তায়ালা ‘আলহামদ’ শব্দ প্রয়োগ করেছেন। মাওলানা আমিন আহসান ইসলাহী তাঁর তাফসীরে উল্লেখ করেন যে, শোকর শব্দের চেয়ে হামদ শব্দটি ব্যপক অর্থবোধক। হামদ শব্দের অর্থ শোকর গুজারী ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। কেবল তারিফ বা প্রশংসা বুঝাইলে মাদহ শব্দ প্রয়োগ করা হতো। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় কারো কোন উপকার বা অনুগ্রহের জন্য। মানুষের উপর আল্লাহর নেয়ামতের অন্ত নেই। তার জীবনের সব কিছুই তাঁর অনুগ্রহ দান। এখানে আল-হামদ বলার কারণে অর্থ দাঁড়ায় শুধুমাত্র প্রশংসা নয় বরং সমস্ত ধরনের প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা আল্লাহর জন্য। আর এর বহিঃপ্রকাশ মৌখিক ভাষা তথা তাহমিদ ও তাসবীহ এর মাধ্যমে হতে পারে। আবার শারীরিক অংগ প্রত্যংগের মাধ্যমেও প্রকাশিত হতে হবে যে আমরা আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দাহ। ইবন জারীর তাবারী বলেন আলহামদুলিল্লাহ দ্বারা আল্লাহ তায়ালা প্রত্যক্ষভাবে নিজের প্রশংসা করে পরোক্ষভাবে স্বীয় বান্দাহকে নিজের প্রশংসা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে অনেক কিছু দান করেছেন একান্ত অনুগ্রহ করে। আল্লাহ প্রদত্ত অনুগ্রহরাজির মাঝে সব চেয়ে বড় অনুগ্রহ হচ্ছে মহাগ্রন্থ আলকুরআন আমাদেরকে দান। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,‘প্রশংসা আল্লাহর যিনি তাঁর বান্দাহর প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং এরমধ্যে কোন বক্রতা রাখেননি: সূরা আল কাহফ-১ । মহাগ্রন্থ আলকুরআন পথহারা মানুষদেরকে পথের সন্ধান দিয়েছে। এটা নাযিল করা হয়েছে মানবতাকে অন্ধকার থেকে আলোর সন্ধান দেয়ার জন্য। আল্লাহ ইরশাদ করছেন, আলিফ লাম রা- এটা একটি গ্রন্থ যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি- যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন-পরাক্রান্ত প্রশংসারযোগ্য পালনকর্তার নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে: সূরা ইরবরাহীম-১।

আলো-বাতাস, পানিসহ আল্লাহ প্রদত্ত অসংখ্য অনুগ্রহ রাজির মধ্যে আমরা ডুবে রয়েছি। আকাশ থেকে পরিমিত বৃষ্টি বর্ষন করেন এরফলে নানা ধরনের ফল ফলাদি, কৃষিপন্য, গাছ-গাছালী উৎপন্ন হয়। এই প্রসংগে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, আর যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞাসরা কর কে আকাশ থেকে পানি বর্ষন করেছেন এবং তার সাহায্যে মৃত পতিত ভুমিকে সঞ্জীবিত করেছেন, তাহলে তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। বলো সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য কিন্তু অধিকাংশ লোক বোঝেনা: সূরা আনকাবুত-৬৩।

আল্লাহ বলেন, তুমি কি দেখনা আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষন করেন এবং তারপর তার মাধ্যমে বিচিত্র বর্ণের ফল বের করে আনি : সূরা ফাতির-২৭। অন্যত্র ইরশাদ করেন, সেই আল্লাহ যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে গালিচা হিসাবে বিচিয়ে দিয়েছেন আকাশকে ছাদ হিসাবে নির্মাণ করেছেন তারপর সে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষন করে তার সাহায্যে নানা ধরনের ফল উৎপন্ন করে তোমাদের জন্য রিযিকের ব্যবস্থা করেছেন: সূরা বাকারা-২২।

আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ করেন, তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষন করেন, তার সাহায্যে সব ধরনের উদ্ভিদ উৎপাদন করেছেন এবং তার দ্বারা শস্য শ্যমল ক্ষেত-খামার ও বৃক্ষ তরু-লতার সৃষ্টি করেছেন এবং তা থেকে বিভিন্ন কোষ সম্পন্ন দানা বের করেছেন, খেজুরের মোচা থেকে ফলের থোকা বানিয়েছেন যা বোঝার ভারে নুয়ে পড়ে। আর সজ্জিত করেছেন আংগুর, যায়তুন ও ডালিমের বাগান সাজিয়ে দিয়েছেন। সেখানে ফলসমূহ পরস্পর স্বদৃশ, অথচ প্রত্যেকটির বৈশিষ্ট্য আবার ভিন্ন ভিন্ন। এই গাছগুলো যখন ফল ধারণ করে তখন এদের ফল বের হওয়া ও তা পেকে যাওয়ার অবস্থাটা একটু সুক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখো: সূরা আনআম-৯৯।

আল্লাহর প্রশংসা এই জন্য যে, যিনি ক্ষুধার সময় আহার দান করেন এবং ভয় ভীতির সময় নিরাপত্তা দান করেন: সূরা কুরাইশ। আল্লাহ আরও বলেন, হে নবী তাদেরকে বল তোমরা কি কখনো চিন্তা করে দেখেছো আল্লাহ যদি কিয়ামত পর্যন্ত তোমাদের উপর রাতকে অব্যাহত রাখেন তাহলে আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবুদ আছে তোমাদের আলো এনে দিবে: আল কাসাস-৭১।

আল্লাহ আরও কত নেয়ামত দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। তিনি বলেন, তোমাদের নিকটবর্তী আকাশকে বিরাটায়াতন প্রদীপরাশি দ্বারা সুসজ্জিত ও সমুদ্ভাসিত করে দিয়েছি: সূরা মূলক-৫। আল্লাহর সকল নেয়ামতরাজির জন্য আমাদেরকে সব সময় আল্লাহর হামদ (প্রশংসা) করতে হবে। এই প্রসংগে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, সুতরাং আল্লাহর মহিমা ও গুণকীর্তন প্রকাশ করো যখন তোমাদের সন্ধ্যা হয় এবং যখন তোমাদের সকাল হয়। আকাশ সমুহে ও পৃথিবীতে তাঁর জন্যই প্রশংসা এবং (তাঁর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষনা কর) তৃতীয় প্রহরে এবং যখন তোমাদের কাছে এসে যায় যোহরের সময়: সূরা রুম। আল্লাহ আরও বলেন, মেঘের গর্জন তাঁরই প্রশংসা সহকারে পবিত্রতা বর্ণণা কর: আর রাদ ১৩।

শুধু মৌখিক প্রশংসার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাঁরই ইবাদত করতে হবে। আল্লাহ বলেন, তিনি চিরঞ্জিব। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তোমাদের দ্বীন তাঁর জন্য নিবেদিত করে তাঁকেই ডাকো। গোটা সৃষ্টিজগতের রব আল্লাহর জন্যই সমস্ত প্রশংসা: সূরা মুমিন-৬৫।

আল্লাহ তায়ালা কি চমৎকার শারীরিক কাঠামো দিয়ে আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সুন্দরতর অবয়বে: সূরা ত্বীন-৪। সমস্ত সৃষ্টিরাজির মধ্যে মানুষকে আল্লাহ তায়ালা সর্বাধিক সুন্দর আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ ইরশাদ করছেন, ‘তিনি পৃথিবী ও আকাশ মন্ডলকে সত্যতার ভিত্তিতে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমাদের আকার আকৃতি অত্যন্ত সুন্দর করে নির্মান করেছেন: সূরা তাগাবুন-৩।

আল্লাহ তায়ালা আমাকে দুটো চোখ, দুটো হাতসহ কত অংগ প্রত্যগ দান করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, আমি কি তাকে দেইনি চক্ষুদয়, জিহবা ও ওষ্ঠদ্বয়: সূরা আল বালাদ ৮-৯)। আল্লাহ তায়ালা আমাকে অনুগ্রহ করে দুটি হাত দিয়েছেন; পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে তাদের কারো দুটো বা কারো একটি হাত নেই। যাদের দুটো হাত নেই তারা পা ব্যবহার করে মুখে অনেক কষ্টে খাবার গ্রহণ করে। আমার মত হাত দিয়ে লিখতে পারেনা; পা দিয়ে লিখে। অনেকর মত হাত দিয়ে ড্রাইভিং করতে পারেননা; পা দিয়ে ড্রাইভিং করেন। অপরদিকে তাদের দুটো হাত না থাকার কারণে অখিরাতে তাদেরকে হাত দিয়ে কোন পাপ কাজ করেছে কিনা আমার মত তার জবাব দিতে হবেনা। আমাকে আল্লাহ তায়ালা সমান দৈর্ঘের দুটো হাত দিয়েছেন। একটি হাত বড় বা ছোট হলে দেখতে শুধু অসুন্দর লাগতোনা; কাজ কর্ম করতেও কষ্ট হতো।

তাফসীরকারক আল্লামা ইবন জারীর তাবারী, আল্লামা ইবন কাসীর, ইমাম কুরতুবীসহ অসংখ্য মুফাসসির এই হাত দ্বারা অসংখ্য তাফসীর লিখেছেন। ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম মালেক, ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল ফিকহ চর্চা করেছেন। ইসলামী রেঁনেসা আন্দোলনের অন্যতম অগ্রদূত মুজাদ্দেদে আলফে সানী সাইয়েদ আহমদ শিরহিন্দ, শাহওয়ালী উল্লাহ দেহলভী, আব্দুল ওয়াহাব নাজদী, বদিউজ্জমান সাঈদ নুরসী, সাইয়েদ কুতুব শহীদ, সাইয়েদ অবুল অলা মওদুদী প্রমুখ তাযদীদুল আফকার তথা চিন্তাধারার সংস্কার সাধনে কত লেখনী লিখেছেন। আমি আমার হাতকে কতটুকু দ্বীনের কাজে ব্যবহার করছি?

পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে তাদের আমার মত দুটো পা নেই। তাদের কেউ কেউ হুইল চেয়ারে বসে চলাফেরা করে; আবার কেউ কেউ হাত ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগিয়ে চলে। আর যাদের সে সামর্থ্য নেই তারা অনেক কষ্টে চলাফেরা করেন। ১৯৯৭ সালে আমি আঘাত প্রাপ্ত হয়ে প্রায় ছয়মাস চলাফেরা করতে কষ্ট হতো তখন অনুভব করেছি চলাফেরা, উঠা নামা করা কত কষ্টকর। ফিলিস্তীনের শাইখ ইয়াসীন হুইল চেয়ারে বসেও ফজরের জামাতে শরীক হন এবং শাহাদাত বরণ করেন। হামাগুড়ি দিয়ে অনেকই দ্বীন প্রতিষ্ঠায় জীবন দিয়েছেন। আমি কি করছি? আমি মসজিদে গিয়ে জামাতে নামায আদায় করতে কতটুকু তৎপর? সুস্থ অবস্থায় আমি যদি এইভাবে তৎপর থাকি তাহলে অসুস্থ হয়ে মসজিতে যেতে না পারলে নেকী পেতাম। সালাত আল- ক্বিয়ামুল লাইল করতে করতে আল্লাহর রাসুলের পা ফুলে যেতো। অথচ তিনি ছিলেন নিষ্পাপ। আর আমি তো ঘুমের ঘোরে কাটিয়ে দিই সারা রাত। তাহলে আমি কিভাবে পাব নাযাত?

আমার মত অনেক মানুষের দুটো চোখ ও দৃষ্টি শক্তি নেই। যারা জন্ম থেকে চোখে দেখেন না কিংবা কোন সমস্যার কারণে দৃষ্টিশক্তি হারান তাঁদের কাছে রাত ও দিন সমান। তারা আল্লাহর সুন্দর এই পৃথিবীর অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে পাননা। চাঁদ-সুরুজ-গ্রহ-নক্ষত্র কোন কিছুই তারা উপভোগ করতে পারেননা। নদীর ঢেউ, পাহাড়ের গাছ-গাছালি; আকাশে পাখ-পাখালির কলতান কোন কিছুই তাঁরা দেখতে পাননা। তাঁদের পক্ষে চোখে দেখে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন তিলাওয়াতের সুযোগ হয়না।

মক্কা-মদীনায় হাজ্জ ও উমরার জন্য তাঁরা গমন করলেও বায়তুল্লাহ ও আল্লাহর নবীর রাওয়াহ তাঁরা দুচোখ ভরে দেখতে পাননা। ২০১৬ সালে আমার এক চোখে সাময়িক সমস্যা হওয়ার পর অনুভব করেছি আল্লাহর এই জমীনে চোখের আলো কত বড় নিয়ামত। আবার যাদের চোখে দৃষ্টিশক্তি নেই তাঁরা অনেক হারাম দৃশ্য দেখার অপরাধ থেকে মুক্ত। আমার এই দুটো চোখের দৃষ্টিশক্তি কত দিন থাকবে আমি জানিনা। আগে কোন কিছু পড়ার জন্য চশমা লাগতোনা; এখন তা লাগে। অনেক মানুষ পৃথিবীতে আছেন যারা চশমা দিয়েও আর দেখার সুযোগ নেই।

আল্লাহ আমাকে মুখ দিয়েছেন; মুখ দ্বারা কত ধরনের খাবার গ্রহন করি। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছেন যাদের মুখ আছে কিন্তু মুখ দ্বারা খাবার গ্রহণ করতে পারেননা। তারা স্যলাইনের মাধ্যমে অথবা নাকের ভিতর দিয়ে কত কষ্টে খাবার গ্রহণ করতে হয়। আমি কি এই সব মানুষদের কষ্ট দেখে আল্লাহর শোকর গুজার হই। আল্লাহ তায়ালা আমাকে হজম শক্তি দান করেছেন। আবার পানীয় ও খাবারের অপ্রয়োজনীয় অংশ আমার শরীর থেকে আল্লাহ প্রদত্ত অংগ প্রত্যংগ দিয়ে বের হয়ে যায়। ২০২১ সালে আমার ইউরিন রেটেনশান হওয়ার পর আমি তীব্রভাবে অনুভব করেছি এর যাতনা কত বেশী। আমার জীবনে একদিনের কিছু অংশ উক্ত কষ্ট অনুভব করেছি। কিন্তু অর্ধশতাব্দীর বেশী কাল আল্লাহ যে সহজেই তাঁর নিয়ম মাফিক তা শরীর থেকে বের করে নিয়েছেন তার জন্য আমি কি শুকরিয়া আদায় করেছি।

আমি প্রতি নিয়ত অক্সিজেন গ্রহণ করি এবং নাইট্রোজেন ত্যাগ করি। কোভিড-১৯ এর সময় হাজারো বনী আদম তীব্রভাবে অনুভব করেছে অক্সিজেনের গুরুত্ব। কারণ অনেক শিল্পপতি যখন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন হাসপাতালে ছটফট করে মারা গেছেন; তাদের অর্থের অভাব ছিলনা। সেই সময় তাদের মনে হয়েছিল সমস্ত সম্পদ দিয়ে হলেও একটু অক্সিজেন যদি পাওয়া যেতো।

আল্লাহ তায়ালা আমাকে যবান দান করেছেন; আমি কথা বলে মনের ভাব প্রকাশ করি। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের চেহারা দেখতে আমার চেয়ে সুন্দর; তাদের মুখ আছে কিন্তু বাকশক্তি নেই। তাদেরকে আমরা বোবা বলি। তারা উচ্চস্বরে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেনা; তাসবীহ, তাহলীল, যিকর, দুআ পড়তে পারেনা। তারা এসব মনে মনে জপেন। কোন কিছু খাবার পর উচ্চস্বরে আলহামদুলিল্লাহ; আবার সুন্দর কিছু দেখার পর মাশাআল্লাহ জোরে বলতে পারেননা।

আবার গীবত, চোগলখুরি, পরনিন্দা, ফাহেশা কথা, গালমন্দ, তাদের মুখে উচ্চারিত হয়না। তাদের আমার মত চিন্তা নেই। আমাকে আমার প্রতিটি কথার জন্য জবাবদিহী করতে হবে। তাদের যবান দ্বারা কেউ কষ্ট পায়না; আমি আমার যবান দ্বারা কতশত মানুষকে কষ্ট দিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। আমি প্রতিনিয়ত কত অনর্থক কথা বলি তার হিসাব নেই। লোকমান হাকীম তো অনর্থক কোন কথা বলতেননা। এটা ছিল তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ইমাম ইবনে তাইমিয়াতো প্রতিনিয়ত অর্থবহ নতুন কথা শোনাতেন। আল্লামা দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীতো সুন্দর কণ্ঠস্বরে লাখো মানুষকে কুরানের বাণী শুনিয়েছেন; কবি মতিউর রহমান মল্লিকতো গানের সূরে সূরে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় উজ্জীবিত করেছেন। আর আমি? আমি মাঝে মধ্যে আতংকিত হয়ে উঠি; আল্লাহর দরবারে কি নিয়ে হাজির হব। কিন্তু আশা একটিই তিনি রাহমানুর রাহীম। (চলবে)

* আব্দুদ্দাইয়ান মুহাম্মদ ইউনুছ লেখক ও গবেষক, চেয়ারম্যান হিউম্যান কেয়ার ইনিশিয়েটিভ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *