কাশ্মীর থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের কথা ভাবছে ভারত

এশিয়া সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

ভারতশাসিত কাশ্মীরের সীমান্ত এলাকা ছাড়া বাকি সব জায়গা থেকে সেনাবাহিনীকে পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়ার একটি প্রস্তাব ভারত সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ রিপোর্ট করেছে, এই প্রস্তাব রূপায়ণের সিদ্ধান্ত ‘প্রায় চূড়ান্ত’ হয়ে গেছে। তবে শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ রাজনৈতিক স্তরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তারা জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। আবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অস্বীকার করেও কোনো বিবৃতি আসেনি। এই মুহূর্তে ভারতশাসিত কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার সদস্য রয়েছে, যার মধ্যে ৮০ হাজারের মতো সেনা পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মোতায়েন। বাকি প্রায় ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের অভ্যন্তরে বা ‘হিন্টারল্যান্ডে’, যারা মূলত কাশ্মীর উপত্যকা বা জম্মুতে ‘কাউন্টার ইনসার্জেন্সি’ বা সন্ত্রাসবাদ দমনের কাজে নিয়োজিত। সরকারের পরিকল্পনা হলো, এই ৫০ হাজার সেনাকেই ধাপে ধাপে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তার জায়গায় তুলনায় অনেক কম সংখ্যায় আনা হবে আধাসামরিক বাহিনী বা সিআরপিএফকে, যারা সন্ত্রাস দমন ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে স্থানীয় পুলিশকে সহায়তা করবে।

অনন্তনাগ বা কুলগামের মতো উপত্যকার যে জেলাগুলোতে পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে শান্ত, পর্যায়ক্রমিক এই প্রত্যাহারের প্রথম ধাপে সে সব এলাকা থেকেই সেনাদের সরিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। এরপর ধীরে ধীরে পুরো জম্মু ও কাশ্মীরের ভেতর থেকেই (অবশ্যই সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখা ছাড়া) সেনাদের সরিয়ে আনা হবে।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে জানিয়েছে, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সার্বিক সহিংসতার মাত্রা অনেকটা কমেছে বলেই এই সেনা প্রত্যাহারের কথা ভাবা হচ্ছে। সরকার দাবি করছে, গত সাড়ে তিন বছরে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা তার আগের সাড়ে তিন বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক কমেছে।

কাশ্মীরে বিক্ষুব্ধ জনতা আগে যে কথায় কথায় পাথর ছুড়ত, গত কয়েক বছরে সেটাও প্রায় হয়নি বললেই চলে। ঐ সূত্রটির কথায়, ‘এই যে কাশ্মীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি অনেকটাই ফিরেছে বলে আমরা মনে করছি, সেখানে এই ব্যাপক সেনা উপস্থিতি তার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয় বলেই ঐ সেনা সদস্যদের সরিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে।’ —বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *