কারচুপি স্বীকার করে রাওয়ালপিন্ডির প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ইস্তফা

এশিয়া সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

রাওয়ালপিন্ডির প্রধান কমিশনার লিয়াকত আলী চাথা ভোটের ফল নিয়ে কারচুপির অভিযোগ স্বীকার করে শনিবার পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগ করার খবরে পুরো পাকিস্তান জুড়ে তোলপাড় হয়। এরই মাঝে খবর পাওয়া যায় রাওয়ালপিন্ডি সিটি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

লিয়াকত আলী চাথা শনিবার বলেছেন যে, তিনি জনসাধারণকে এই ভুলের বিষয়টি জানাতে চান যে, ৭০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকা ব্যক্তিকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লিয়াকত আলি। তিনি বলেন, রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে ৮ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে এবং তিনি এর দায় স্বীকার করেন। বলেন, পরাজিতের ভোট নিয়ে বিজয়ী প্রার্থীকে ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করেছি আমরা। রাওয়ালপিন্ডি বিভাগের মানুষদের সঙ্গে আমি অবিচার করেছি।

তিনি বলেন, আমার বিভাগের রিটার্নিং অফিসারদের কাছে আমি ক্ষমা চাই। তাদেরকে আমি যা করার নির্দেশনা দিয়েছিলাম, তার জন্য অধীনস্তরা কান্নাকাটি করেছেন। তিনি দাবি করেন, এখনও নির্বাচনের স্টাফরা ব্যালট পেপারের ওপর ভুয়া স্ট্যাম্প লাগিয়ে দিচ্ছে। তার ভাষায়- রাওয়ালপিন্ডির কাচেহরিচকে যা করেছি, তার মধ্য দিয়ে আমরা দেশের সঙ্গে অন্যায় করেছি। এদিন সকালে তিনি আত্মহত্যারও উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে জানান।

রাওয়ালপিন্ডির প্রধান কমিশনারের এই স্বীকারোক্তি পিটিআইয়ের দাবিকে জোরালো করেছে। প্রমানিত হয়েছে যে, জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কারচুপি হয়েছে। রাওয়ালপিন্ডি বিভাগে ১৩টি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি আসন রয়েছে, যেখানে ১১টি পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) প্রার্থীকে জয়ী দেখানো হয়, বাকি একটি স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং একটিতে পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে (পিপিপি) জয়ী দেখানো হয়েছিল। বিভাগটিতে২৭টি প্রাদেশিক আসনও রয়েছে – যেখানে পিএমএল-এন ১৫টি এবং ১১টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে দেখানো হয়।

তার চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশের পর, পুলিশ প্রথমে বলেছিল যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কিন্তু পরে রাওয়ালপিন্ডি পুলিশের মুখপাত্র এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন যে শীর্ষ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

গুরুতর এই অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা শেরি রেহমান। তিনি বলেন, পুরো অঞ্চলের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে কমিশনারের উচিত তথ্যপ্রমাণ দেয়া । তিনি এর জন্য প্রধান বিচারপতিকে দায়ী করেছেন। নির্বাচন কমিশনেরও উচিত ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া।

লিয়াকত আলির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মোহসিন নাকভি। তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *