কাতারে আজ শুরু হচ্ছে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা আজ আবার শুরু হচ্ছে। রমজান শুরুর পর এবারই প্রথম ইসরায়েলি কর্মকর্তা ও হামাসের নেতারা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন। মিশরীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এপি ও আরব নিউজ এ খবর দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা আশা করেছিলেন রমজানের আগেই ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়ে বাস্তবায়িত হবে। এমন কী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এমন আশ্বাস দেন। তবে রমজানের প্রথম সপ্তাহ প্রায় শেষ হয়ে এলেও এখনো থামেনি গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা।

আরব নিউজ লিখেছে, পাঁচ মাসেরও বেশি সময়ে যুদ্ধ এবং ইস্রায়েলি অবরোধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবেতর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে জাতিসংঘ বারবার উপকূলীয় অঞ্চলের ২.৪ মিলিয়ন লোকের জন্য দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করেছে।

এক সপ্তাহ আগে ইসরায়েল বলেছিল গাজায় জনাকীর্ণ ও তুলনামূলকভাবে নিরাপদ শহর রাফাহে একটি নতুন আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করেছে। তখন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ এই অঞ্চলে দু’দিনের সফর শুরু করে রাফাহের উপর হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন যে এর ফলে বিপদ রয়েছে এবং এতে অনেক ভয়াবহ বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটবে।

সর্বশেষ ইসরায়েল বলেছে, হামাস কর্তৃক জিম্মি ও বন্দীদের বিনিময় সহ যুদ্ধবিরতির জন্য একটি নতুন প্রস্তাব উপস্থাপনের পরে মধ্যস্থতাকারীদের সাথে আরও আলোচনার জন্য কাতারে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। এই দলের নেতৃত্ব দেবেন মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থার ডেভিড বার্নিয়া।

আলোচনার সাথে পরিচিত একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনজমিন নেতানিয়াহু আলোচনা শুরুর আগে এই প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য সুরক্ষা মন্ত্রিসভা আহ্বান করতে চাইছেন।

হামাস জানিয়েছে, গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্ত নেই এমন কোনো চুক্তিতে তারা রাজি নন। এই দাবিকে ‘অবাস্তব’ বলে নাকচ করেছে ইসরায়েল।

তবে মিশরীয় কর্মকর্তারা জানান, তিন পর্যায়ের এই প্রস্তাবে পাকাপাকিভাবে যুদ্ধ বন্ধের কথা বলা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ছয় সপ্তাহ যুদ্ধে বিরতি দেবে দুই পক্ষ। এ সময়য় ৩৫ জন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পাবেন, যাদের মধ্যে আছেন অসুস্থ, বয়স্ক মানুষ ও নারীরা। বিনিময়ে, ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ৩৫০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন।

এ ছাড়া, হামাস আরও অন্তত পাঁচ নারী সেনাকে মুক্তি দেবে। তাদের মুক্তির বিনিময়ে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৫০ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। এ পর্যায়ের অন্যান্য শর্তের মধ্যে আছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে গাজার দুইটি মূল সড়ক ছেড়ে যেতে হবে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরে যেতে দিতে হবে এবং এ অঞ্চলে ত্রাণের প্রবাহে কোনো বাধা দেওয়া যাবে না।

দ্বিতীয় পর্যায়ে, উভয় পক্ষ স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেবে এবং হামাস অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেবে। বিনিময়ে, আরও কিছু বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।

তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে হামাসের হাতে থাকা নিহত জিম্মিদের মরদেহ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বিনিময়ে, ইসরায়েল গাজা অবরুদ্ধ করে রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও বাস্তবায়ন করবে এবং শহরটির পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারে সহায়তা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *