কথা দিচ্ছি যতোদিন বন্যা আছে, ততোদিন মানুষের পাশে আছি: তাশরীফ খান

ফিচার বাংলাদেশ বিনোদন সময় সংবাদ সাম্প্রতিক সিলেট
শেয়ার করুন

ফয়সাল আমিন কাজি (ফাহিম ফয়সাল): চাইলেই বা ইচ্ছে থাকলেও বিপদে মানুষের পাশে সবাই দাঁড়াতে পারেনা। এর জন্য লাগে প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য্য, মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস। সিলেটের ভয়াবহ বন্যার সময়ে অসহায় মানুষের পাশে নিঃস্বার্থে, নিঃসংকোচে দাঁড়িয়েছ তরুণ সংগীতশিল্পী তাশরীফ খান সেটাই করে দেখাচ্ছেন। বানভাসী মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত তুলেছেন ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি টাকা। যা সত্যি বিষ্ময়কর একটি ব্যাপার।

বন্যার্ত মানুষের সহায়তায় গত সপ্তাহেই সিলেটে পৌঁছেছেন এই তরুণ শিল্পী। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে গত ১৬ জুন প্রথমবার নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক থেকে লাইভ করে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে অর্থ সহায়তার আহ্বান জানান। ফেসবুক লাইভে এসে যখন সিলেট ও সুনামগঞ্জের বানভাসি মানুষদের সহায়তার আহ্বান জানানোর পর দুই বারে তার তহবীলে এখন পর্যন্ত কোটি টাকারও বেশি জমা পড়েছে বলে জানা যায়।

প্রথম লাইভে যখন তিনি সাহায্যের আবেদন করেন তখন খুব কম সময়ের মধ্যে সব মিলিয়ে ১৬ লক্ষ টাকা জমা পড়ে। এরপর ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাকিং এ লেনদেনের লিমিট পূরণ হয়ে যাওয়ায় তিনি শুভাকাঙ্খীদের টাকা না পাঠাতে অনুরোধ করেন। এবং বলেন, আগে এই টাকা দিয়ে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করি, তারপর লাগলে আবারও বলবো।

প্রথমবারের টাকার ত্রাণ বিতরণ যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে আসে, তখন আবারও ফেসবুক লাইভে এসে গত ১৯ জুন দ্বিতীয়বারের মতো সাহায্যের জন্য সবার কাছে আবেদন জানান তিনি। তার এহেন প্রশংসনীয় উদ্যোগের কারনে এবার ঘটে আরও অভাবনীয় ঘটনা। এবার সাড়া দেয় আরও বেশি সংখ্যক মানুষ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এবার তাশরীফের ফান্ডে জমা পড়ে কোটি টাকারও বেশি।

দেশ-বিদেশের মানুষের এমন অভাবনীয় সাড়ায় আপ্লুত এই তরুণ শিল্পী সিলেটের নিজের ব্যান্ড সদস্য এবং স্থানীয় তরুণদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের বানভাসি মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। তার এমন প্রসংশনীয় উদ্যোগ ও কার্যক্রমের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যবৃন্দরা ও স্থানীয় প্রশাসন।এ বিষয়ে ২২ জুন, বুধবার তাশরীফ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, ‘আমি জানি আপনারা সবাই আমাদের আপডেট জানার জন্যে অপেক্ষায় থাকেন। শুরুতে জানুন আমরা সবাই সুস্থ আছি আলহামদুলিল্লাহ। গত কয়েকদিনে আমরা ৩০০০ (তিন হাজার) এর বেশি পরিবারের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছি এবং প্রতিদিন আরও দিচ্ছি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যেসব জায়গায় একেবারেই খাবার যাচ্ছে না সেসব জায়গাগুলোতে পৌঁছাবার। কিছুটা স্বস্থির সাথে জানাচ্ছি দ্বিতীয়বার ফান্ড কালেকশন শুরু করার পর প্রথম ২৪ ঘন্টায় আমরা ১ কোটি টাকার বেশি সংগ্রহ করেছি আলহামদুলিল্লাহ। এখন পর্যন্ত খুব সম্ভবত ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার বেশি এসেছে এবং এখনও আসছে।’

সামনের দিনগুলোতে তাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী কয়েকদিনে আমরা অন্তত ১০,০০০ (দশ হাজার) পরিবারের কাছে খাবার পৌঁছে দেব। এবার শুধু শুকনো খাবারই না, সাথে থাকবে ভাতের চাল, ডাল, বাচ্চাদের জন্যে দুধ, খেজুর, মোমবাতি, কিছু ইমার্জেন্সি ঔষধ সহ আরও প্রয়োজনীয় অনেক কিছু।

সময় পেলেই ফেসবুক লাইভে এসে তাশরীফ পরিস্থিততির আপডেট দিচ্ছেন। এবং পাশাপাশি বলছেন, যারা সাহায্য পাঠাচ্ছেন তাদের পাঠানো প্রত্যেকটি পয়সাই তার কছে অসহায় মানুষের আমানত। সুতরাং, সবাই যেনো তার এবং তার টিমের জন্য দোয়া করেন যাতে তারা সকল কিছু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে। শুধু তাই নয়, তরুণ এই সংগীতশিল্পী মানুষের পাঠানো টাকার স্বচ্ছতার জন্য লাইভে এসে ত্রাণসামগ্রীও দেখাচ্ছেন। বানভাসি মানুষের জন্য তরুণ শিল্পীল এমন উদ্যোগ প্রশংসিত হয় সর্বস্তরে।

তিনি জানান, সিলেটের সব যায়গায় এখন নেটওয়ার্ক না থাকায় সবসময় আপডেট জানানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে একটি ব্যাপারে সবাইকে আস্বস্ত করতে চাই, এখন থেকে যে এলাকায়ই যাবো সে এলাকার কোন মানুষের আর না খেয়ে থাকা লাগবে না। এইটুকু বিষয় নিশ্চিত করার জন্যেই বার বার করে সবার কাছে সাহায্যের জন্য হাত বাড়াচ্ছি। এই জন্য আমরা তাড়াহুড়ো করে কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না।

পাশাপাশি নতুন আরেকটি উদ্যোগ সম্পর্কেও জানান এই সংগীতশিল্পী। তিনি বলেন, খুব শিঘ্রই আমরা একেবারে বঞ্চিত এলাকাগুলোর আশ্রয়কেন্দ্রে তিন বেলা রান্না করে খাওয়ানোর ব্যাবস্থা করবো। ওরাওতো আমাদের মতোই মানুষ। শুকনো খাবার খেয়ে আর কতদিনই বা থাকতে পারবেন তারা। এরও প্ল্যানিং চলছে।

আরেকটি বিষয়ে তিনি বলেন, তা হচ্ছে যেহেতু সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা হচ্ছে সেহেতু অনেকেই আর্থিক সাহায্য পাঠাতে বলছেন। কিন্তু যেহেতু এই টাকাগুলো আমার কাছে মানুষের আমানত। সেহেতু আমি এখানে বসে অন্য কোথাও ফান্ড পাঠাতে পারছি না। শীঘ্রই আমরা অন্যান্য জেলায় গিয়েও কাজ করবো। আমি যা ই করি সবাইকে জানিয়ে করবো। আপনারা আমার উপর সবাই ভরসা রাখবেন। কথা দিচ্ছি বন্যা যতোদিন আছে ততোদিন আমি এবং আমার তাসরিফ স্কোয়াড বানভাসি মানুষের পাশে আছি।

তাশরীফ জানান, খাবার তো দূরে থাক পানির কলের উপরে পানি উঠে যাওয়ায় পানি না খেয়েও দিন পার করছে কতশত মানুষ। এদের রেখে পালাতে চাই না আমি। সম্ভব হলে অনুদান পাঠিয়েন সাধ্যমত, কোন জোর নেই।

সাহায্য পাঠানোর মাধ্যমঃ
বিকাশ পার্সোনাল- 01764-260009, 01301-085383, 01677-381886, 01746-428149.
রকেট পার্সোনাল- 01301-0853832.
নগদ পার্সোনাল– 01789-509970, 01730-250850, 01764-260009.

Bank Account:
Dutch Bangla Bank Limited
A/C No. 7017510061059
Name: Md. Tanjeeb Khan Saad
Branch: Mirpur, Dhaka.

আরও পড়ুন
কোথাও আগুন লাগলে সতর্কতার জন্য যা করবেন, যা করবেন না
আগুনে পুড়লে মৃত ব্যক্তির মর্যাদা ও আগুন লাগলে যে দোয়া পড়বেন
দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কিপক্স; প্রয়োজন সতর্কতা
দেহকে সুস্থ রাখবে অ্যালোভেরা
বসন্তের বাতাসে অ্যালার্জির প্রবণতা, একটু গাফিলতি হলেই মারাত্মক বিপদ
রাসূল সা: প্রবর্তিত খাদ্যবিজ্ঞান । ডা: মো: তৌহিদ হোসাইন
তরমুজের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
যে খাবারে শিশুর উচ্চতা বাড়ে
ইন্ডাস্ট্রির সকলের স্বার্থে কপিরাইটের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিঃ ফাহিম ফয়সাল
অতিরিক্ত আবেগ মনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে
আক্ষেপ প্রকাশ করলেন ‘ছুটির ঘণ্টা’র নির্মাতার মেয়ে বিন্দি
ওজন কমাতে সাহায্য করে যে সকল খাবার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *