বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে প্রকাশিত মানবজমিন পত্রিকার প্রধান শিরোনাম “ওয়াশিংটন দূতাবাসে মিলিয়ন ডলার চুরি, তদন্ত ফাইল গায়েব”। এতে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী চক্র। আত্মসাৎ করেছে দূতাবাসের এক লাখ ৭৬ হাজার ডলারের ইমার্জেন্সি ফান্ড।
এছাড়া দূতাবাসের অ্যাকাউন্ট থেকে কৌশলে সরানো হয়েছে আরও প্রায় সোয়া তিন লাখ ডলার। সেই চুরির প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংবাদটিতে বলা হচ্ছে, শুধু সিডর ইমার্জেন্সি ফান্ড বা দূতাবাসের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ লোপাট নয়, রাষ্ট্রদূতের বাসভবন (বাংলাদেশ হাউস) মেরামতেও ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
“অর্থের সংস্থান ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই বড় চ্যালেঞ্জ” শিরোনামে প্রধান সংবাদ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার। জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন নিয়ে এ সংবাদটি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে এবার বাজেটে খরচের লাগাম টানা হচ্ছে। প্রতি বছর গড়ে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ আকার বাড়ানো হলেও এবার মাত্র সাড়ে চার শতাংশ বাড়িয়ে বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। আগামী বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণের অঙ্ক বাড়ানো হচ্ছে বলে সংবাদটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
বণিক বার্তা পত্রিকার প্রধান শিরোনাম “বৈধ আয়ে সর্বোচ্চ কর ৩০%, কালো টাকা সাদা করলে কর ১৫%”। এতে বলা হয়েছে, অ-প্রদর্শিত বা অবৈধভাবে উপার্জিত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে আজ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করতে সরকারকে কর দিতে হবে মাত্র ১৫ শতাংশ। যদিও প্রদর্শিত বা বৈধ আয়ের ওপর কর পরিশোধ করতে হবে তার দ্বিগুণ।
নতুন বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণীর সর্বোচ্চ করসীমা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীতের প্রস্তাব করা হচ্ছে। অর্থাৎ বৈধ আয়ের ওপর করাঘাত আরো বাড়ল। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও দেশের উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আয়কর রিটার্নে সম্পদের প্রকৃত মূল্যের পাশাপাশি আয়ের তথ্য গোপন করা হচ্ছে।
রাজধানীর গুলশান-বনানীসহ অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট কিনতে গেলে প্রতি বর্গফুটের দাম পড়ছে ২০-২৫ হাজার টাকা। ভবনের অবস্থান ও নান্দনিকতার ওপর ভিত্তি করে এর চেয়েও বেশি দাম দিতে হয়। সেক্ষেত্রে দুই হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের মূল্য গিয়ে দাঁড়াচ্ছে চার থেকে ছয় কোটি টাকায়। অথচ নিবন্ধনে অভিজাত এসব ফ্ল্যাটের মূল্য দেখানো হচ্ছে কোটি টাকারও কম।
আবার দেশের বিদ্যমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী কোনও সরকারি কর্মকর্তারই এসব এলাকায় ফ্ল্যাট কেনার সামর্থ্য থাকার কথা নয়। যদিও বাস্তবতা ভিন্ন। অভিজাত এলাকা-গুলোয় প্লট বা ফ্ল্যাটের প্রধান ক্রেতাই এখন সরকারি কর্মকর্তারা।
প্রথম আলো পত্রিকার প্রধান সংবাদ “ছোট হচ্ছে বাজেটের আকার” । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিত্য-পণ্যের বাড়তি দামের কারণে কষ্টে আছে মানুষ। মে মাসেও মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের কাছাকাছি। আছে ডলার সংকট। এ কারণে পণ্য আমদানি সংকুচিত করে রাখা হয়েছে।
এক বছর আগের মে মাসের তুলনায় এ বছরের মে মাসে রপ্তানি আয় কমে গেছে ১৯ শতাংশ। রাজস্ব আয়েও ভালো প্রবৃদ্ধি নেই। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০ মাসে (জুলাই – এপ্রিল) ঘাটতি আছে ২৬ হাজার কোটি টাকা। এতে আরো বলা হয়েছে, মাসের পর মাস ধরে বাড়ছে দেশি-বিদেশি দেনা পরিশোধের চাপ। বিদ্যুতের দেনা পরিশোধের ডলার তো নেই-ই, টাকাও নেই। পাওনাদারদের অর্থাৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর অর্থ দিতে না পেরে ব্যাংকগুলোকে ৮-১০ বছর মেয়াদি বন্ড দিয়ে সরকার আপাতত পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে বলে এই প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।
“ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে আসবে না পরিবর্তন” সমকাল পত্রিকার প্রথম পাতার একটি প্রতিবেদন। ভারতে টানা তৃতীয় বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)। ফলে নতুন করে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসবে না বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কূটনীতিকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপির রাজনীতি ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রদায়িকতার যে বিষ ছড়িয়েছিল, দেশটির জনগণ তাদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে তা রুখে দিয়েছে। এতে করে ভারতের গণতন্ত্রের ইতিবাচক ধারার প্রভাব প্রতিবেশী দেশগুলোতে পড়বে বলে তারা মনে করছেন। দুর্বল দল হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেও যেভাবে নিজ অবস্থান তুলে ধরেছে কংগ্রেস, তা বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে দলটির সম্পর্ক বাড়াবে, যা বিজেপির জন্য অস্বস্তির কারণ হবে বলে প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
কালের কণ্ঠ পত্রিকায় বাজেটের খবরের পাশাপাশি আরেকটি শিরোনাম ভারতের নির্বাচন নিয়ে। “নীতিশ- নাইডুর সমর্থন পেলেন মোদি” শিরোনামে এই প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভোটের লড়াইয়ে কিছুটা ম্রিয়মাণ বিজয়ের পরদিন আগামী সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছেন বিজেপি নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বুধবার নয়াদিল্লিতে নিজ বাসভবনে বৈঠক করেছেন তিনি। বৈঠকে সরকার গঠনের জন্য মোদিকে লিখিত সমর্থন দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী জনতা দল- ইউনাইটেডের নীতিশ কুমার এবং তেলেগু দশম পার্টির চন্দ্রবাবু নাউডুসহ জোটের অন্য শরীকরা। এরই মধ্যে মোদিকে এনডিএ জোটের নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সরকার গঠন নিয়ে সব জল্পনার অবসান হলো বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
“Govt to rely more on local banks than foreign funds” দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। এতে বলা হয়েছে, সরকার আগামী অর্থবছরে বৈদেশিক অর্থায়নের চেয়ে দেশীয় ব্যাংক ঋণের ওপর বেশি নির্ভর করবে। যা অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াবে।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ক্রমবর্ধমান ঋণ পরিসেবা ব্যয় এবং বিদেশি তহবিলের কম ব্যবহারের কারণে নেট বৈদেশিক অর্থায়ন ২৫ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছিল। ঋণ সেবার ব্যয় বাদ দিয়ে নেট বৈদেশিক অর্থায়ন গণনা করা হয়।
২০২৪-২৫ সালে নেট বৈদেশিক অর্থায়ন ১২ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে নিট বৈদেশিক অর্থায়ন হিসেবে এক লাখ ২৪৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। যা পরবর্তীতে ৭৬ হাজার ২৯৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
ইংরেজি পত্রিকা নিউ এইজের প্রথম পাতার একটি উল্লেখযোগ্য সংবাদ সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদকে নিয়ে।
“Ex-army chief Aziz’s wealth under ACC scanner” এই শিরোনামে করা সংবাদটিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে বুধবার নতুন করে অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
প্রাক্তন সেনাপ্রধানের সম্পদ প্রকাশ করে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের পর কমিশন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য সংবাদপত্রের প্রতিবেদনটি দুদকের বাছাই সেলে পাঠানো হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান জানিয়েছেন, যেহেতু আজিজের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, কমিশনের রীতি অনুযায়ী এখন পত্রিকার প্রতিবেদনটি আগের অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, “সর্বশেষ অভিযোগের বিষয়ে আলাদা কোনো তদন্ত শুরু করার দরকার নেই। কারণ ওই ব্যক্তি ইতোমধ্যেই কমিশনের স্ক্যানারে রয়েছে”।
দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রথম পাতার একটি উল্লেখযোগ্য সংবাদ “শ্রমিক পাঠাতে না পারায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে: প্রধানমন্ত্রী”। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর-পর্বে মালয়েশিয়ার শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে তিনি এ কথা বলেন। মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে কী সমস্যা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু সম্পূরক প্রশ্নে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর ব্যর্থতা কার জানতে চান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কর্মসংস্থানের জন্য যাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। অনেকেই গিয়ে থাকেন। সরকার বৈদেশিক কর্মসংস্থানে সহযোগিতা করে থাকে। কিন্তু কিছু লোক দালালের মাধ্যমে যেতে চায়। যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে যায়। এতে সমস্যা তৈরি হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সরকার বিশেষ ফ্লাইট চালু করেছিল। বিশেষ ফ্লাইট ও অন্যান্য ফ্লাইটের সঙ্গে সংযুক্ত করে সবাইকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অনেকেই বাদ পড়েছে। বাদ পড়ার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে”। – বিবিসি বাংলা