অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন এবং তিনি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণকে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত কেবিনেট সভায় তিনি এই আহবান জানান। সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আজ কেবিনেট বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং ড. ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণকে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনের কথা বলেছেন।’
তিনি জানান, দশ জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে এবং সর্বশেষ হিসেবে ৩৬ লাখ মানুষ বন্যা-কবলিত হয়েছে। দূর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে উপদেষ্টাগণ এই জেলাগুলো পরির্দশন করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করেছেন যাতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে দু’দেশ যৌথভাবে মোকাবিলা করতে পরে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি ভারত সরকারকে এই প্রস্তাব দেন।
সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ‘ড. ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আমরা যে ধরনের ফ্ল্যাগ মিটিং করি, উচ্চ পর্যায়ের এমন একটি কমিটি করা গেলে এটি ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মিটিং করবে এবং উভয় দেশ যৌথভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করবে।’
ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস আন্তঃসীমান্ত নদীসমূহের অমীমাংসিত পানির হিস্যার বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করে বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ও ভারত আন্তঃসীমান্তে অবস্থিত এবং অনেক আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে, সুতরাং এ ধরনের উদ্যোগ বন্যার মত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের জন্য সহায়ক হবে।
ভারতের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বিমসটেক ও সার্ককে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, সার্কভুক্ত দেশের তরুণরা নিজেদের সমৃদ্ধির জন্য যেন একসঙ্গে কাজ করতে পারে আমদের সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি দূঢ়ভাবে একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুতপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাস করি।’
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ত্রিপুরায় এবার যে বন্যা হয়েছে তা নজিরবিহীন। সেখানে ৫০ হাজারের মত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় পানির পরিমাণ এত বেশি ছিল যে উপচে পড়ে পানি বাংলাদেশে ঢুকেছে।