ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল-সহ সাত কর্মকর্তা নিহত

মধ্যপ্রাচ্য সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) এলিট কুদস ফোর্সের সিনিয়র কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি-সহ সাত কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলের হামলায় তারা মারা গেছেন বলে দাবি করেছে ইরান রেভ্যুলেশনারি গার্ডস।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদির সহযোগী কুদস ফোর্সের ডেপুটি কমান্ডার মোহাম্মদ হাদি হাজি রহিমি এবং আরও পাঁচজন অফিসারও নিহত হয়েছেন বলে আইআরজিসি জানিয়েছে। ইরান সিরিয়ায় তার কনস্যুলেটে মারাত্মক বিমান হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।

২০০০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকে কাসেম সোলেইমানিকে মার্কিন হত্যার পর নিহত মোহাম্মদ রেজা জাহেদি এই বাহিনীর সবচেয়ে সিনিয়র নেতা। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটিকে একটি “ঘৃণ্য” এবং “নৃশংস” আক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় দামেস্কের পশ্চিম মেজেহ জেলার একটি হাইওয়েতে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেট ভবনটিকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বিমান হামলার ঘটনাটি ঘটে। এতে কনস্যুলেট ভবনটি পুরোপুরি ধসে গেছে। এমনকি ভবনের ভেতর যারা ছিলেন, তাদের সবাই আহত অথবা নিহত হয়েছেন।

ইরানের রাষ্ট্রদূত হোসেইন আকবরী বলেছেন, ইসরায়েলি এফ ৩৫ যুদ্ধবিমানটি নৃশংসভাবে আমার বাসস্থান এবং দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগ এবং ইরানের সামরিক শাখায় হামলা চালায়। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিকে তিনি জানান, কয়েকজন কূটনীতিকসহ পাঁচ থেকে সাতজন নিহত হয়েছেন।

পরে এক বিবৃতিতে রেভল্যুশনারি গার্ডস জানিয়েছে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাদি হাজি-রাহিমিসহ তাদের সাতজন অফিসার নিহত হয়েছেন। যাদের কমান্ডার এবং ‘সিনিয়র সামরিক উপদেষ্টা’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

ইরানের গণমাধ্যমগুলো বলছে, জাহেদি ৬৩ কুদস ফোর্সের একজন জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি রেভ্যুলেশনারি গার্ডের বিদেশি অপারেশন শাখা এবং ২০০৮ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে লেবানন ও সিরিয়ায় কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আর হাজি-রাহিমিকে জাহেদির ডেপুটি হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, যে আটজন নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে একজন কুদস ফোর্সের উচ্চপদস্থ নেতা, দুই ইরানি উপদেষ্টা এবং বিপ্লবী গার্ডের পাঁচ সদস্য।

সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মেকদাদ হামলাকে নৃশংস দাবি করে এর তীব্র নিন্দা জানান। বলেন, এই হামলায় ‘বেশ কিছু নিরপরাধ মানুষ’ নিহত হয়েছে। মি. মেকদাদের সাথে ফোনালাপে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এই হামলাকে আন্তর্জাতিক নিয়মের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দেন। ‘এই হামলার জন্য জায়োনবাদী শাসন ব্যবস্থা দায়ী’ বলেও জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এর আগে গত জানুয়ারিতে, মেজেহ শহরে আরেকটি হামলায় ইসরায়েলকে দায়ী করা হয়েছিল, তাতে পাঁচজন সিনিয়র রেভোলিউশনারি গার্ড এবং বেশ কয়েকজন সিরিয়ান নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়। ইরান বলেছে যে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীকে ‘পরামর্শ’ দেওয়ার জন্য সিরিয়ায় রেভ্যুলেশনারি গার্ডদের পাঠানো হয়েছে। তবে তারা যুদ্ধ বা ঘাঁটি স্থাপনে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। সুত্র: বিবিসি ও স্কাই নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *