জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর একটি বক্তব্যের জেরে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের বক্তব্যে এনসিপিতে বেশ প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডিতে ইশরাক হোসেনের বক্তব্য তুলে ধরে বলেছেন, ইশরাক রাজনৈতিক অপরিপক্কতার চূড়ান্ত এক্সিকিউশন দেখিয়েছেন।
সারজিস আলম লিখেছেন, ‘তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বিএনপি’র সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে যা বলেছেন সেখানে ব্যক্তি আক্রমণ করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সাথে যায় না। যদিও তিনি নাম উল্লেখ করেননি। কিন্তু তার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন মুখপাত্র জনাব ইশরাক হোসেন গতকাল তার বক্তব্যে যা বলেছেন তার উল্লেখযোগ্য কিছু লাইন যদি একটু দেখি—
১. যেখানে মব (বৈষম্যবিরোধী, ছাত্রজনতা ও এনসিপিকে টার্গেট করে) দেখবেন সেখানে তাদেরকে উলঙ্গ করে উচিত শিক্ষা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিবেন।
২. নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী নামের একটা বেয়াদব, বদমাইশ ছেলে। ৩. এই ডার্বি নাসিরকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই, মুখ সামলে কথা বলেন, তা নাহলে আপনাদেরকে রাজনৈতিকভাবে ঘেরাও দিয়ে আপনাদের রাজনীতির ইতি আমরা সেখানে টেনে দিবো। ৪. রাজনীতি অনেক দূরের কথা, এদেরকে প্রাইমারি স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। ৫. ফেব্রুয়ারি থেকে নির্বাচন যদি একদিনও পেছানোর চেষ্টা করে তাহলে এই সরকারকে আমরা এক ঘন্টাও রাখবো না। ৬. অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ম্যান্ডেট কি? কিছুই না।
আমি মনে করি জনাব ইশরাক গতকালকে যা বলেছেন সেটা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর বক্তব্যের চেয়ে কয়েকগুণ নিচু লেভেলের এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। তার এই বক্তব্যে রাজনৈতিক শ্রদ্ধাবোধের বহিঃপ্রকাশ তো ঘটেইনি বরং আওয়ামী লীগ তাদের সময়ে যেভাবে বিএনপির সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে তিরস্কার করে কথা বলতো সেই টোনে তিনি কথা বলেছেন। ক্ষমতাকে অপব্যবহার করার সর্বোচ্চ ক্ষোভ ঝেড়েছেন। আবেগ এবং রাজনৈতিক অপরিপক্কতার চূড়ান্ত এক্সিকিউশন দেখিয়েছেন।
সারজিস আলম আরো লিখেছেন, আমরা যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মিউচুয়াল রেসপেক্টের সম্পর্ক দেখতে চাই তাহলে আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের জায়গা থেকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যদের চেয়ে ভালো কিছু করে এক্সামপল সেট করতে হবে। যত বড় দল, দায়িত্ব তত বেশি।’
উল্লেখ্য, শনিবার একটি সমাবেশে পাটওয়ারী বলেন, আগে শামীম ওসমান ছিলেন নারায়ণগঞ্জের গডফাদার, এখন শুনি কক্সবাজারে নব্য গডফাদার শিলং থেকে এসেছেন। ঘের ও জমি দখল, চাঁদাবাজি করছেন, কক্সবাজারের জনতা এসব মেনে নেবে না। সংস্কারবিরোধীদের রাজপথেই প্রতিরোধ করা হবে। তার এ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন জেলা বিএনপি নেতাকর্মীরা।
কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে এ সমাবেশ করে এনসিপি। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদকে ইঙ্গিত করে এ মন্তব্য করেছেন বলে মনে করে বিএনপি। এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর করে বিএনপির লোকেরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করেছে।