ইমরান পন্থীদের বিরাট জয় ও ১৩ মালায় ইমরান খানের জামিন

এশিয়া সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান দেশটির ১৬তম সাধারণ নির্বাচনে জয় দাবি করেছেন। মি. খানের দলের সাথে সম্পৃক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে সর্বাধিক আসন জিতেছে। পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের মোট আসন সংখ্যা ২৬৬টি (একটি স্থগিত)। এর মাঝে ২৫০টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে।

নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের মধ্যেই ১৩ মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গত বছর ৯মে দাঙ্গার ঘটনায় জামিন দিয়েছে রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাস বিরোধী আদালত। একই সঙ্গে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতা শাহ মেহমুদ কুরেশি জামিন পেয়েছেন।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের মতে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এখন পর্যন্ত ৯৮টি আসন জিতেছে, বেশিরভাগই পিটিআই’র সাথে যুক্ত। কিন্তু আসন সংখ্যার দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ বলছেন, তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগই (পিএমএল-এন) এই নির্বাচনের সবচেয়ে বড় দল। এই কারণে তিনি অন্যদের তার সঙ্গে যোগ দিয়ে সরকার গঠন করার আহ্বান জানিয়েছেন।

পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ পার্টি (পিএমএলএন)এখন পর্যন্ত ৬৯টি আসন নিয়ে দ্বিতীয়-সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছে। পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫১টি আসন নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল এখনও প্রকাশ না হলেও প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, কোনও দলই এই নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয় লাভ করেনি। পাকিস্তানে সরকার গঠন করার জন্য কোনও দলকে ন্যূনতম ১৩৪টি আসনে জয়লাভ করতে হবে।

ইমরান খান জেল থেকে তার ভেরিফায়েড এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি এক ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছেন। ভিডিওতে তিনি দাবি করেন যে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর ওপর শত দমন-পীড়ন চলা সত্ত্বেও তারা এই নির্বাচনে ‘ভূমিধস বিজয়’ অর্জন করেছেন। তার দল সমর্থিত প্রার্থীদেরকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য তিনি ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এদিকে সমস্ত জল্পনা-কল্পনাকে ছাপিয়ে পিটিআই সমর্থিতদের এমন সাফল্য তথা জয় অপ্রত্যাশিত। পিটিআই প্রার্থীরা ‘ক্রিকেট ব্যাট’ প্রতীকের অধীনে নির্বাচন করতে পারবে না, নির্বাচন কমিশন এরকম একটা আইন জারি করায় এই প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধ্য হয়েছিলো। পাকিস্তানের সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার তিনদিনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জানাতে হবে যে, তারা কোন দলে যোগ দেবেন নাকি স্বতন্ত্র হিসাবেই থাকবেন।

পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মোট আসনসংখ্যা ৩৩৬টি। তার মধ্যে ২৬৬ আসন হলো সাধারণ আসন, যেগুলোতে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ৭০টি আসন সংরক্ষিত। সেগুলোর ৬০টি নারীদের ও ১০টি অমুসলিমদের। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ আসনগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আসন হলো পাঞ্জাবে, ১৪১টি। সিন্ধু, খাইবার পাখতুনখোয়া, বালুচিস্তান ও ফেডেরাল ক্যাপিটালে আছে যথাক্রমে ৬১টি, ৪৫টি, ১৬টি ও তিনটি। সুত্র: বিবিসি, সিএনএন ও ডন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *