সাবেক পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি গতকাল সোমবার নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে ওঠেছেন। আজ মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন।
ট্রাম্প (৭৬) ফ্লোরিডা থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে নিউইয়র্কের ফিফথ এভিনিউতে এসে পৌঁছান এবং আকাশচুম্বী ভবনে প্রবেশ করেন। ট্রাম্প যখন ম্যানহাটনের ট্রাম্প টাওয়ারে পৌঁছান, তখন সেখানে তাঁর সমর্থক ছিলেন কয়েকজন। এর চেয়ে বেশিসংখ্যক পুলিশ-সাংবাদিকের ভিড় দেখা গেছে।
ট্রাম্পের উপস্থিতি ঘিরে শুধু ম্যানহাটন নয়, পুরো নিউইয়র্কের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দুপুরের আগেই ট্রাম্প টাওয়ারের আশপাশে মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রাম্প টাওয়ারসহ ম্যানহাটনের ফিফথ অ্যাভিনিউ জুড়ে মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ।
ট্রাম্পকে নিয়ে গণমাধ্যমে আগ্রহ বরাবরই ছিল। এখন তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বের তাবত সংবাদমাধ্যম ফলাও করে এসংক্রান্ত খবর প্রচার-প্রকাশ করছে। তাই ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে ভিড় করেন অসংখ্য সাংবাদিক। অনেকেই সেখান থেকে ট্রাম্পের নিউইয়র্কে পৌঁছানোর খবর সরাসরি সম্প্রচার করেন।
উল্লেখ্য,ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক পর্ণো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস এর সাথে সম্পর্কের কথা ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত হন। প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের কোন প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন। সাবেক পর্ণো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস দাবি করেন, ২০০৬ সালে তার সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এর ১০ বছর পর ২০১৬ সালে ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন তখন স্টর্মি ড্যানিয়েলস মিডিয়ার কাছে সম্পর্কের ব্যাপারে মুখ খুলতে চান। মুখ বন্ধ রাখতে আইনজীবীর মাধ্যমে ড্যানিয়েলসকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দেন ট্রাম্প। এভাবে অর্থ দেয়া আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ নয়। কিন্তু বিপত্তি বাঁধার কারণ, ট্রাম্প ওই ১ লাখ ৩০ হাজার ডলারকে আইনি খরচ হিসেবে দেখিয়েছেন; ফলে তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক হিসেবে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে আগে ঘটায় নির্বাচনি আইন ভঙ্গেরও অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে কি-না সে সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব ছিল নিউইয়র্ক সিটির ডিস্ট্রিক্ট অ্যার্টনি অ্যালভিন ব্র্যাগের ওপর। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্যে তিনি গ্রান্ড জুরি গঠন করেন। গত বৃহস্পতিবার এ জুরি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত জানায়। তবে তার বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ আনা হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। কারণ, আদালতে বিচারপতি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে না পড়ে শোনানো পর্যন্ত এ গুলো প্রকাশ করা হবে না।