আজিজুল হক মানিক, অনন্য প্রতিভার একজন মানুষ

সাম্প্রতিক সিলেট
শেয়ার করুন

সেলিম আউয়াল

আজিজুল হক মানিক, নানামাত্রিক পরিচয়ে পরিচিত একজন মানুষ- লেখক, শিক্ষক, সাংবাদিক, সংগঠক, জনপ্রতিনিধি, বাগ্মী, সুবক্তা, সফল সমাজকর্মী। সিলেটের সাহিত্যের অঙ্গনে, সাংবাদিকতার জগতে, সমাজের মানুষের সেবায় আজিজুল হক মানিক আপন আলোয় উদ্ভাসিত।

আজিজুল হক মানিকের জন্ম ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দের ১৮ মার্চ, সিলেট নগরীর দরগাহ মহল্লার ঝরনার পারে। সিলেটে গ্রন্থাগার আন্দোলনের পথিকৃৎ, দেশের প্রাচীনতম সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও আজীবন সম্পাদক, মাসিক আল ইসলাহ্’র প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ভাষাসৈনিক মুহম্মদ নূরুল হক তার পিতা। তিনি বাংলা একাডেমি’র ফেলো, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত এবং পাকিস্তান আমলে ‘তমগায়ে খেদমত’ পুরষ্কার পেলেও মুক্তিযুদ্ধকালে তা বর্জন করেন।

আজিজুল হক মানিকের আম্মা বেগম নূরুন্নেসা হক একজন সমাজসেবী ও লেখিকা। তাদের গ্রামের বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর গ্রামে। দশ ভাইবোনের মধ্যে আজিজুল হক মানিক চতূর্থ। তাদের ভাইবোনেরা সবাই সাহিত্য সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে। ভাইবোনেরা হচ্ছেন- সবার বড়ো লেখিকা হামিদা খাতুন শেফালী, দ্বিতীয় গল্পকার জোবেদা খাতুন শিউলী, তৃতীয় বিশিষ্ট লেখিকা ও অবসরপ্রাপ্ত কর কমিশনার রোকেয়া খাতুন রুবি, চতূর্থ মানিক, পঞ্চম দৈনিক সিলেটের ডাক-এর প্রধান বার্তা সম্পাদক ও দৈনিক নয়াদিগন্ত-এর সাবেক সিলেট ব্যুরো প্রধান ছড়াকার এনামুল হক জুবের, ষষ্ট সাংবাদিক- ছড়াকার সিরাজুল হক তালহা, সপ্তম যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাজেদা খাতুন শুভী, অষ্টম মরহুম শফিকুল হক বেলাল, নবম লে. কর্নেল জিয়াউল হক খালেদ (অব.), দশম ব্যবসায়ী নজমুল হক তারেক।

আজিজুল হক মানিক নগরীর আম্বরখানা দরগাহ গেইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন, এখান থেকে প্রাইমারি বৃত্তিসহ প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। দি এইডেড হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। মদনমোহন কলেজ থেকে বিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স পাশ করেন।

মেধাবী মানিক পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি কবিতা, বক্তৃতা, বিতর্ক, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা ইত্যাদিতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। মদনমোহন কলেজের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহে তিনি পর পর তিনবার চ্যাম্পিয়ন হন। বিশেষ করে তার কবিতা আবৃত্তি ছিলো চমৎকার। অনেক দীর্ঘ কবিতা ছিলো তার মুখস্থ।

বাংলাদেশ টেলিভিশন আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মদন মোহন কলেজের পক্ষ থেকে তিনি দুইবার অংশগ্রহণ করেন এবং দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময়ে মফস্বলের কোন একটি কলেজ থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো।

আজিজুল হক মানিক সিলেটের ছাত্র আন্দোলনে এক উজ্জ্বল তারকা। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে মদন মোহন কলেজে ভর্তি হবার পর তিনি ছাত্র আন্দোলনের একজন বলিষ্ঠ নেতা হিসেবে সামনের সারিতে চলে আসেন। যুক্তিপূর্ণ জ্বালাময়ী বক্তৃতা, শিক্ষার্থীদের দাবী-দাওয়া আদায়ের আন্দোলনে তার ভূমিকার কারণে খুব কম সময়ের মধ্যেই তিনি ছাত্রছাত্রীদের একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। বিশেষ করে কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় তার কৃতিত্বের স্বাক্ষর, কলেজের কদমতলায় দাঁড়িয়ে ভরাট গলায় তার বক্তৃতা শিক্ষার্থীদেরকে মুগ্ধ করতো। ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন নেতা হিসেবে ১৯৮২ সালে অনুষ্ঠিত মদনমোহন কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি বিপুল ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ছড়া দিয়েই আজিজুল হক মানিকের লেখালেখিতে হাতেখড়ি। ১৯৭৬ সালে মাওলানা ভাসানীর সাপ্তাহিক হক কথা পত্রিকায় প্রথম তার লেখা ছাপা হয়। তবে তার লেখালেখির শুরু ১৯৭৪-৭৫-এর দিকে। পরবর্তীতে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় তাঁর অনেক ছড়া, কবিতা, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনি, গল্প প্রকাশিত হয়। শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি লেখালেখি ছাড়েননি। খুব বেশি পড়াশোনা করতেন। বিশেষ করে ছাত্র জামানায় তিনি কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ লাইব্রেরিতে ঘন্টার পর ঘন্টা অধ্যয়ন করেছেন। দৈনিক জালালাবাদে তার একটি ভ্রমণকাহিনি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিলো। তার খুব ইচ্ছে ছিলো সেটি তিনি বই করে বের করবেন, সেটা আর হয়ে উঠেনি। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে নানা রঙের ছড়া নামে তার একটি ছড়ার বই বের হয়েছিলো। চৈতন্য প্রকাশনী বইটি বের করে।

কলেজে থাকতেই আজিজুল হক মানিক সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে সাপ্তাহিক সিলহট কন্ঠের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে সাংবাদিকতায় তার যাত্রা। পরবর্তীতে তিনি সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার জন্মলগ্ন থেকেই তিনি পত্রিকাটির সাথে সম্পৃক্ত হন। একসময়ে তিনি পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ পঁচিশ বছর তিনি দৈনিক জালালাবাদ’র সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। পত্রিকাটির জন্যে তিনি অনেক শ্রম ও মেধা দিয়েছেন। তার জালালাবাদ জীবনের অধিকাংশ দিনেই ভোর আলো ফোটার পর পত্রিকা অফিস থেকে বাসায় ফিরেছেন। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তিনি পত্রিকাটিকে একটি জনপ্রিয় পত্রিকায় পরিণত করতে সক্ষম হন।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাংবাদিকদের অধিকার আদায় মর্যাদা বৃদ্ধিতে তিনি ছিলেন সোচ্চার। এজন্যে সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলো তার গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা। তিনি সিলেট প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

আজিজুল হক মানিক দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের পরিচালনা কমিটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। শৈশবে পিতার হাত ধরে সাহিত্য সংসদে তার আগমন, লাইব্রেরির একনিষ্ঠ পাঠক হিসেবে দীর্ঘদিন করেছেন পড়াশোনা। সাহিত্য সংসদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন সেই শৈশব থেকে। একসময় তিনি কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সাহিত্য সংসদের মুখপত্র সাহিত্য সাময়িকী আল ইসলাহ’র সম্পাদকও ছিলেন। সাহিত্য সংসদের উন্নয়নে আজিজুল হক মানিকের অবদান অনস্বীকার্য।

১৯৮৭ সালে সাহিত্য সংসদের প্রাণপুরুষ মুহম্মদ নূরুল হকের ইন্তেকালের পর সংসদের এক বিশাল শূণ্যতার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সাহিত্য সংসদের পাঠাগার আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হলে এর মুল দায়িত্ব পালন করেন আজিজুল হক মানিক। তার নেতৃত্বে একদল তরুণ মুসলিম সাহিত্য সংসদের পাঠাগারকে ডিউ ডেসিমেল পদ্ধতিতে রূপান্তরিত করেন। কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের একটি অন্যতম কার্যক্রম, প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাহিত্য আসর আয়োজন। দেশের নানা জায়গা থেকে নবীন প্রবীণ লেখকরা সেই সব আসরে লেখা পড়তেন, তাদের লেখা নিয়ে আলোচনা হতো, এইসব আলোচকদের অন্যতম ছিলেন আজিজুল হক মানিক।

আজিজুল হক মানিক সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সাহিত্যসংগঠন সংলাপ সাহিত্য সংস্কৃতি ফ্রন্টের একজন সক্রিয় কর্মী-সংগঠক ছিলেন। সংলাপের অনেকগুলো সাহিত্য আসর তার বাসায় অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ইয়থ এপ্রোচ নামে তরুণদের একটি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। সিলেটের শিশু-কিশোর সংগঠন গোলাপ কুড়ি’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আজিজুল হক মানিক। যা পরবর্তীতে ফুলকুঁড়িতে রূপান্তরিত হয়।

লেখক-সাংবাদিকতার পাশাপাশি একজন জনপ্রিয় শিক্ষক হিসেবেও ছিলো তার আলাদা পরিচিতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী আজিজুল হক মানিক শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজে দীর্ঘদিন প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলা পড়াতেন। তিনি ক্লাসে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ধর্ম, ইতিহাসের মিশেলে এমনভাবে কথা বলতেন, ক্লাসের ছাত্ররা তন্ময় হয়ে তার বক্তব্য শুনতো। তার ক্লাসের পরিবেশ ছিলো আলাদা, মনে হতো মৃত্যুপুরী। ছাত্ররা অপেক্ষায় থাকতো তার ক্লাসের। অন্য ক্লাসের ছাত্ররা সুযোগ পেলে চলে আসতো তার ক্লাসে।

পরবর্তী জীবনে ফুলটাইম সাংবাদিকতা ও জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালনে নিমগ্ন হওয়ায় শিক্ষকতা পেশা থেকে আজিজুল হক মানিক অবসর নেন। অবশ্য শিক্ষকতা শুরুর আগে তিনি দু বছর ব্রাক’র কর্মকর্তা হিসেবে টাঙ্গাইল অঞ্চলে কাজ করেন।

আজিজুল হক মানিক নগরীর দরগাহ মহল্লা এলাকার সমাজ উন্নয়নমুলক সংগঠন পায়রা সমাজকল্যাণ সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও উপদেষ্টা।

একজন সফল সমাজকর্মী হিসেবে আজিজুল হক মানিক সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিপুল ভোটে সিলেট সিটি কর্পোরেশনে ১নং ওয়ার্ডের কমিশনার নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দ্বিতীয়বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এরপর তিনি আর নির্বাচনে দাঁড়াননি। সিটি কর্পোরেশনের একজন জনপ্রিয় কাউন্সিলর হিসেবে তার কার্যক্রম সকল মহলে প্রশংসিত হয়। তিনি ছিলেন একজন সফল জনপ্রতিনিধি।

আজিজুল হক মানিকের সহধর্মিনী দিলওয়ারা বেগম দিলু শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী। তিনি বর্তমানে শিক্ষক হিসেবে ওসমানী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত। তাদের চার সন্তান। বড়ো মেয়ে নাজমুস সামাহ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে স্কলারশিপ পেয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে ফ্রান্সে অধ্যয়নরত। দ্বিতীয় সন্তান পুত্র নাসিফ আলভী হক বর্তমানে নৌবাহিনীতে কমিশন র‌্যাংকে কর্মরত। তৃতীয় কন্যা নাজিফা তাসফিয়াত স্কলার্সহোম সিলেট-এ একাদশ শ্রেণিতে এবং চতূর্থ পুত্র আফিক ফারাবি হক একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

আজিজুল হক মানিক ছিলেন একজন নিরহংকারী ও সাদাসিধা জীবন যাপনকারী। তিনি ছিলেন তার পিতা মুহম্মদ নূরুল হকের যোগ্য উত্তরসূরি। তার ছিলো ব্যাপক অধ্যয়ন। দেখা যেতো প্রতিটি বিষয়েই তার একটি সুস্পষ্ট অথবা বাড়তি ধারণা রয়েছে। সেটা গান হোক, চলচ্চিত্র হোক অথবা সাহিত্য-ইতিহাস হোক। বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তির প্রতি ছিলো তার প্রচন্ড আগ্রহ। ইসলামি আদর্শের পতাকা সমুন্নত রাখতে তিনি ছিলেন অঙ্গীকারাবদ্ধ। তিনি ছিলেন অনেকের অনুপ্রেরণার প্রতীক।

আজিজুল হক মানিক ২০১০ সালে স্ট্রোক করেন। দেশে-বিদেশে চিকিৎসায় কিছুটা আরোগ্য লাভ করলেও দ্বিতীয়বার আবার স্ট্রোক করলে পুরোপুরি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন ধরে জটিল অসুস্থতায় ভুগেন। শেষের দিকে তিনি স্মৃতিশক্তি ও পরবর্তীতে বাক শক্তিও হারিয়ে ফেলেন। গত ২৭ জুলাই ২০২৩, দিবাগত রাত পৌনে একটায় তিনি শহিদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। পরের দিন ২৮ জুলাই বাদ জুমা দরগাহ মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বাদ আসর দরগাহ মসজিদের উত্তর দিকের গোরস্থানে পিতা মুহম্মদ নূরুল হকের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

লেখক : সেলিম আউয়াল, সাংবাদিক ও গল্পকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *