আগুনে প্রায় ৫ হাজার দোকান পুড়ে গেছে ঢাকার বঙ্গবাজারে

বাংলাদেশ সাম্প্রতিক
শেয়ার করুন

আগুনে বঙ্গবাজার অনেকটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই বাজারটি ঢাকায় পাইকারি কাপড়ের বৃহৎ আড়ত হিসেবে পরিচিত। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে আগুন লেগেছে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে পুড়ে গেছে প্রায় ৫ হাজার দোকান। এতে আনুমানিক দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন ক্ষয়-ক্ষতির এ তথ্য জানিয়েছেন।

ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের খবর দেশ-বিদেশের মিডিয়ায় এসেছে। টেলিভিশনগুলোতে লাইভ খবর প্রচারিত হয়। অনলাইন গণমাধ্যমেও টানা সংবাদ প্রচার হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বঙ্গবাজারে আগুনের খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার হয়। রয়টার্স, এপি, আলজাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান ও সিজিটিএন, ডেকান হেরাল্ড, আল আরাবিয়া নিউজ, আরব নিউজ, হিন্দুস্তান টাইমসসহ প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা ও সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে বাংলাদেশের এই খবর।

আগুনের ঘটনা জানার পর ঢাকা এবং আশপাশের জেলার সবগুলো ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট সেখানে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। একপর্যায়ে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে নিযুক্ত হয়। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটও আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় বঙ্গবাজার ও আশপাশের কয়েকটি মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সম্মিলিত সাহায্যকারী দল পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

আলজাজিরা জানিয়েছে, ঢাকার পোশাক কারখানায় টমি হিলফিগার এর মতো পশ্চিমা ফ্যাশন ব্র্যান্ডের প্রস্তুত হয়। কিন্তু রপ্তানি মান পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়া কাপড় এই বঙ্গবাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। এই কারণে অগ্নিকাণ্ডের শিকার মার্কেটটি সবার কাছেই বেশ জনপ্রিয়।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, দুর্বল পর্যবেক্ষণ এবং যথাযথ অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবের কারণে বাংলাদেশের বহু বাণিজ্যিক স্থানে প্রায়ই আগুন লেগে থাকে। বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডসহ অতীতে অনেকবারই বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশের এই শিল্পখাত।

রয়টার্স বলছে, দুর্বল নীতি ও সেগুলোর প্রয়োগ না থাকায় শিল্পসংশ্লিষ্ট নানা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে শত শত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। প্রায় একই ধরনের সংবাদ প্রকাশ করেছে বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি), ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া, আল আরাবিয়া নিউজ, আরব নিউজ, বিজনেস রেকর্ডারসহ আরও অনেক গণমাধ্যম।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, আমাদের জানা মতে, শুধু বঙ্গবাজার কাঠের মার্কেটেই আড়াই হাজারের মতো দোকান রয়েছে। এখানে ছোট ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান দেন। সামনে ঈদ। সবাই ঈদকেন্দ্রিক বেচাকেনার জন্য মালামাল তুলেছেন। ঈদ মৌসুমে অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের পুঁজি বলতে দোকানের মালামালই। মালামাল পুড়ে গেলে তাদের পুঁজি বলতে সব শেষ। এখন তাদের জন্য আমরা সরকারের কাছে রমজানে ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসার ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রাথমিকভাবে ৭০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *