টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের টাউন হলে বাংলাদেশ হেরিটেজ উইকএন্ড এন্ড ট্রেড ফেয়ার ২০২৫ শুরু হয়েছে, যার মধ্য দিয়ে প্রবাসী কমিউনিটিকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার এক অনন্য উদ্যোগের সূচনা হলো।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান যৌথভাবে শনিবার দুপুরে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। এসময় ব্যারোনেস পোলা মঞ্জিলা উদ্দিন, হাই কমিশন লন্ডনের উর্ধতন কর্মকতাবৃন্দ, ইউকে বিবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট রফিক হায়দার ও ডিরেক্টর রহিমা মিয়া সহ ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিলের কেবিনেট মেম্বার ফর কালচার এন্ড রিক্রিয়েশন কাউন্সিলর কামরুল হোসেন, কেবিনেট মেম্বার ফর কাস্টমার সার্ভিসেস এন্ড ইকোলিটিজ কাউন্সিলর বদরুল চৌধুরী এবং কেবিনেট মেম্বার ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিয়িং, কাউন্সিলর সাবিনা আখতার উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সহযোগিতায় আয়োজিত হেরিটেজ উইকেন্ড ও বাণিজ্য মেলার মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এসএমই) এবং যুক্তরাজ্যের বিশেষ করে টাওয়ার হ্যামলেটসের ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করা। পাশাপাশি প্রবাসে নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জানা-বোঝাকে আরও গভীর করা।
বাংলাদেশ হেরিটেজ উইকএন্ড এন্ড ট্রেড ফেয়ার ২০২৫ এর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য মেলা, ‘ঢাকা টু ব্রিক লেন’ শীর্ষক চিত্রকলা প্রদর্শনী, ‘বাংলাদেশ ইন মাই আইজ’ ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী, লিটারেচার মিট ও স্ট্রিট ফুড ফেস্টিভ্যাল। মেলায় অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে আগত ১৩ জন এবং স্থানীয় ১৫ জন মহিলা উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠনের স্টল রয়েছে।

উদ্বোধনী পর্বে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশের গতিশীল অর্থনীতির প্রতিচ্ছবি হলো আমাদের উদ্যমী এসএমই খাত। আজকের এই ট্রেড ফেয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের গণ্ডি পেরিয়ে সরাসরি ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের একটি মঞ্চ। এটি আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনারও একটি প্রদর্শনী। প্রবাসীরা আমাদের প্রধান সম্পদ ও সেরা দূত।”
টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, “টাওয়ার হ্যামলেটসে বাংলাদেশি কমিউনিটির হৃৎস্পন্দন আজও সবচেয়ে জোরালো। আমাদের জনগোষ্ঠীর কৃতিত্বপূর্ণ অবদান আমাদের গর্বিত করে। এই হেরিটেজ উইকএন্ড শুধু অতীতকে স্মরণ নয়, বর্তমানের জীবন্ত সংস্কৃতি ও ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সম্ভাবনারও উদযাপন। এটা বাংলাটাউন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সেতু।”

উদ্বোধনী দিনের বৈশিষ্ট্য ছিল বিকাল ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ‘নো বাংলাদেশ/ বাংলাদেশ কোয়েস্ট’ শীর্ষক ব্রিটিশ বাংলাদেশি শিশু-কিশোর কুইজ প্রতিযোগিতা, যা প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুল গ্রুপের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এটি সমন্বয় করেছিলেন এফএস (পল) সোবর্ণা সাহমিম। অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের সনদ দেওয়া হয়। বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বাংলা ক্যালিগ্রাফি ও রিকশা আর্ট ডেমোনস্ট্রেশনের হাতে-কলমে কর্মশালা ও একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আগামীকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ট্রেড ফেয়ার চালু থাকবে এবং বাংলাদেশ ও টাওয়ার হ্যামলেটসের এসএমই উদ্যোক্তা ও প্রদর্শকদের সাথে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের আরও নিবিড়ভাবে সংযোগের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

