ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে যাচ্ছে। তবে যেসব শর্তে এই সাময়িক যুদ্ধবিরতি হবে তার আলোকেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে- এমন নিশ্চিয়তা যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরকে দিতে হবে বলে দাবি করছে হামাস।
ইসরায়েল এবং হামাস বিস্তৃতভাবে নীতিগত একমত যে, ফিলিস্তিনি বন্দীদের জন্য ইসরায়েলি জিম্মিদের বিনিময়ের লক্ষ্যে এক মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি হতে পারে। অবশ্য হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দিচ্ছে। তারা মনে করছে, বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তি দিলে ইসরায়েল আরো ভয়াবহ হামলা শুরু করবে। এমনকি সেনাবাহিনীর যেসব বন্দী রয়েছে, তাদের ব্যাপারেও তোয়াক্কা করবে না।
এছাড়া ইসরায়েলের হাতে বন্দী সকল ফিলিস্তিনির মুক্তি দাবি করছে হামাস। এমনকি যারা ৭ অক্টোবরে হামলা চালাতে গিয়ে বন্দী হয়েছে, তাদের মুক্তিও দাবি করছে। তবে ইসরায়েল তা মানবে বলে মনে হচ্ছে না। স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যত শর্ত সম্মত না হওয়া পর্যন্ত হামাসও পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে অস্বীকার করেছে।
গাজায় হামাসের হাতে এখনো ১৩২ জন বন্দী রয়েছে এবং তাদের মধ্যে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ইসরায়েল মনে করছে। ইসরায়েল যখন এক পর্যায়ে আলোচনার চেষ্টা করেছে, হামাস “একটি প্যাকেজ চুক্তি” চাইছে যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আগে ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ইসরায়েল ও হামাস সরাসরি কথা না বলে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে কথা বলছে।
আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে, হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি সোমবার রয়টার্সকে বলেন, সংগঠনটি ধারণা নিয়ে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত আছে, কিন্তু এখনও কোনো চুক্তি হয়নি। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং হোয়াইট হাউস, কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মিশরের স্টেট ইনফরমেশন সার্ভিস অবিলম্বে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। দুটি মিশরীয় নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে যে, হামাসকে এক মাসের যুদ্ধবিরতি মেনে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে রাজি করার জন্য কাজ চলছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ব্যাপক চেষ্টা চলছে। ইসরায়েল এর আগে দুই মাসের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতে শর্ত ছিল যে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, মোহাম্মদ আল-দেইফসহ ছয় সিনিয়র নেতাকে গাজা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে হবে। কিন্তু হামাস তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
চার মাসের চলমান যুদ্ধে গাজায় থেকেও ইসরাইলের চোখের আড়ালে রয়েছেন হামাস নেতারা। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টিভি চ্যানেল সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান গাজা যুদ্ধের ব্যাপ্তি চার মাস হতে চলল। তবুও হামাসের সিনিয়র নেতাদের ধরতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল। অবশ্য চলতি মাসে বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় হামাসের এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হন। সেটি ব্যতিক্রম। ইসরায়েলের ধারণা, এখনো হামাসের অন্তত ৭০ শতাংশ যোদ্ধা শক্তি অক্ষত রয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা, আরব নিউজ, রয়টার্স ও সিএনএন