বৃটেনের সাবেক ট্রেজারি মিনিস্টার ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বৃটিশ গোয়েন্দা দলের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। শনিবার গোয়েন্দাদের ঢাকা সফরের খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ জাতীয় দৈনিক ‘দ্য মেইল’।
সুত্র মতে, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠকের পর বৃটিশ তদন্তকারীরা ব্যাপক তদন্ত শুরু করে। গত মাসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) গোয়েন্দাদের বলা হয়, লেবার এমপি টিউলিপের বিরুদ্ধে নতুন প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। তারা শেখ হাসিনার আমলে করা রাশিয়ার সঙ্গে বিতর্কিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চুক্তি নিয়ে তদন্ত করছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ও তার মা শেখ রেহানা সিদ্দিক-সহ পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ক্রেমলিনের দেওয়া ৯০ শতাংশ ঋণে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি রোসাটম নির্মাণ করছে। ২০১৩ সালে চুক্তি স্বাক্ষরের সময়ে এক ছবিতে টিউলিপ সিদ্দিককে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও দেখা গেছে।
এদিকে, গত কয়েক মাস ধরে বৃটেনের মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো টিউলিপের বহু অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করে চলেছ। লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেটের এমপি টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করছে বৃটেনের গোয়েন্দারা। এতে সরকারী দল লেবার পার্টিও বেশ বেকায়দায় পড়েছে।
দ্য মেইল অন সানডেকে উদ্ধৃত করে ডেইলি মেইল অনলাইন খবর দিয়েছে, গত মাসে ঢাকা সফর করেছেন বৃটেনের জাতীয় অপরাধ তদন্ত সংস্থা (এনসিএ)। বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী তদন্তকারীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছে সংস্থাটি।
ডেইলি মেইল বলছে, এ তথ্য সামনে আসার পর এখন বৃটেনের তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ টিউলিপের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ইমেইল রেকর্ড খতিয়ে দেখতে চাইতে পারে। ফলে জিজ্ঞাসাবাদের সন্মুখীনও হতে পারেন বৃটেনের সাবেক ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক।
বাংলাদেশের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে টিউলিপের ‘বিচার’ করার প্রস্তাব দিয়েছে বৃটেনের তদন্তকারী সংস্তা এনসিএ। সূত্রটি বলছে, কোনো বৃটিশ নাগরিকের বিরুদ্ধে যদি বিদেশে ঘুষ নেয়ার বিষয় প্রমাণিত হয় তাহলে ২০১০ সালের ঘুষ আইনের অধীনে তার বিচার করে বৃটেনের সরকার। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
উল্লেখ্য, আগস্ট মাসে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। সুত্র মতে, স্বৈরশাসক হাসিনার পতনের পর দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকা সফর করেছেন বৃটিশ তদন্তকারীরা। হাসিনার শাসনামলে প্রতি বছর দেশ থেকে ১৩ বিলিয়ন পাউন্ড লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।